গঙ্গাপাড়ের বৈদ্যবাটী পুর-শহরকে এক দিকে দিল্লি রোড অন্য দিকে জিটি রোড যুক্ত করছে। তাই এই শহরের উপর দিয়েই ভিন রাজ্য থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাক নিয়মিত কলকাতার পথে আনাগোনা করে। কিন্তু করোনাজনিত পরিস্থতিতে এখন আর ঝুঁকি নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। কারণ ভিন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকেও করোনার খবর মিলেছে। তাই পুর কর্তৃপক্ষ শহরে ঢোকার প্রবেশপথে থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। ট্রাক চালক ও খালাসিদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই তাঁদের ছাড়া হচ্ছে।
পাশাপাশি শহরের প্রতিটি বাজারে দূরত্ব রেখে বিক্রি বা কেনাকাটা চলছে। আর যেখানে সুযোগ আছে, সেখানে বড় জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বাজার। পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘প্রথম দিকে মানুষের একটা ধারণা ছিল যে, আনাজের জোগান নিয়মিত থাকবে কি না। তাই সকালের দিকে বাজারে ভিড় হচ্ছিল। আমরা তাই দূরত্ব বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছি। এখন বাজারে কেউ এলেই তাঁর হাত ধোওয়া বা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’’
গত মাসের ২১ তারিখে লকডাউনের একেবারে শুরুতে এলাকার ২৩টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাই মাস্ক বিলি করেছেন। একই সঙ্গে বিলি করা হচ্ছে শুকনো খাবার। প্যাকেটে চাল, ডাল, আলু। জেলার বৈদ্যবাটী পুর এলাকার একমাত্র শেওড়াফুলির গড়বাগানে বড় যৌনপল্লি রয়েছে। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দননগরের কমিশনার হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে সেখানকার বাসিন্দাদের শুকনো খাবার বিলি করা হয়েছে।
এই সংক্রমণের পরিস্থিতিতে এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। তাই পুর কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন জঞ্জাল সাফের জন্য। আপাতত সকাল, দুপুর আর সন্ধ্যায় তিনটি পর্যায়ে এলাকার জঞ্জাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। বিশেষত বাজারগুলি সাফ-সুতরো করা হচ্ছে পুরসভার উদ্যোগে। রাস্তাঘাট ধোওয়ার কাজ চলছে নিয়মিত। শুধু এলাকা নয়, স্কুলগুলিও পরিচ্ছন্ন রাখতে ধোওয়া-মোছা করা হচ্ছে। কারণ আগামী তিনদিন ধরে এলাকার প্রতিটি স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়ার কাজ চলবে।
পাশাপাশি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী ও আশাকর্মীদের কাজে লাগানো হচ্ছে এলাকার মানুষজনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে। কারও জ্বর বা অন্য কোনও উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার ফিভার ক্লিনিকে আনা হচ্ছে। পুর-এলাকার মানুষজন যাতে এই পরিস্থিতিতে বাইরে না বের হন, তা নজর রাখছেন পুরকর্মীরা। কিন্তু যেখানে প্রয়োজন পড়ছে সেখানে পুলিশ কর্মীদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে মানুষজন অবুঝ হচ্ছেন। তখন কিন্তু আমাদের পুলিশের সাহায্য নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই। কারণ এই পরিস্থিতিতে আমরা কিন্তু কোনও ঝুঁকি নিতে পারি না।’’