Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
বিঘ্নিত হল পঠনপাঠন

পদোন্নতিতে ‘দুর্নীতি’, জগৎবল্লভপুরে কলেজে তালা ঝোলাল টিএমসিপি

পঠনপাঠন নয়, একেবারেই অন্য বিষয়। অথচ তা নিয়ে বিক্ষোভেই বিঘ্নিত হল কলেজের পঠনপাঠন। চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর পদোন্নতি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলেজে তালা ঝুলিয়ে দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share: Save:

পঠনপাঠন নয়, একেবারেই অন্য বিষয়। অথচ তা নিয়ে বিক্ষোভেই বিঘ্নিত হল কলেজের পঠনপাঠন।

চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর পদোন্নতি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলেজে তালা ঝুলিয়ে দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বুধবার হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে শোভারানি কলেজে ওই ঘটনায় হয়রান হতে হল কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের। দু’ঘণ্টার উপর বিক্ষোভ চলার পর অধ্যক্ষ বিক্ষোভকারীদের কাছে মুচলেকা দিলে ফের পঠন-পাঠন শুরু হয়।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীকে করণিক পদে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালন সমিতি। সিদ্ধান্তটি মঙ্গলবার কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে অনুমোদিত হয়। ওই সময়ে পরিচালন সমিতির দুই সদস্য জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাফিজুল রহমান এবং টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সভাপতি সৌম্যদীপ বেরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই কর্মীকে যেভাবে করণিক পদে উন্নীত করা হয়েছে তাতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তাই ওই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা যাবে না। যদিও পরিচালন সমিতি দুজনের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। ওই কর্মীকে নিয়োগপত্রও দিয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার নতুন পদে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ওই কর্মীর। তিনি যাতে কাজে যোগ দিতে না পারেন সে জন্য এ দিন সকাল ১০টা থেকে ছাত্র সংসদের সভাপতি সৌম্যদীপের নেতৃত্বে কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য-সমর্থকেরা। ছিলেন সোহেল গায়েন, রমা সরকার, মেরিনা খাতুন, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ সংগঠনের নেতারা। কলেজে ঢুকতে না পেরে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীদের। পঠনপাঠনের স্বার্থে অধ্যক্ষ বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি বিক্ষোভকারীরা।

শেষ পর্যন্ত অধ্যক্ষ লিখিতভাবে জানান, ফের কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত ওই নিয়োগ কার্যকর করা হবে না। এর পর বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বর মাসেই ন্যাক-এর এ সার্টিফিকেট পেয়েছে কলেজ। কলেজে পঠনপাঠনের মান বেশ উন্নত বলে জানিয়েছে তারা। কিন্তু তার পরই এমন ঘটনায় কলেজের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে বলে মত শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রীদের। যদিও সৌম্যদীপের যুক্তি, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অন্যায়ভাবে পদোন্নতি হয়েছে। এতে কলেজের বদনাম হতো। তা রুখতেই ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’’

অধ্যক্ষ কল্যাণকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘সব নিয়ম মেনেই চতুর্থ শ্রেণির ওই কর্মীর পদোন্নতি হয়।’’ তা হলে নতুন পদে নিয়োগ তিনি স্থগিত করলেন কেন? উত্তরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কিছু করার ছিল না। এ দিন কলেজের গেটে তালা দেওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। ছাত্রছাত্রীরাও অধৈর্য হয়ে পড়ছিলেন। বিঘ্ন হচ্ছিল পঠনপাঠনে। তাই কলেজ খুলতে মুচলেকা দেওয়া ছাড়া আমার উপায় ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMCP College Corruption Promotion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE