এ রাজ্যে প্রথাগত আমন চাষ আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার উপর নির্ভরশীল। তাই আবহাওয়ার মর্জির উপর নির্ভর না করে কী ভাবে আধুনিক প্রযুক্তিতে ধান চাষ করে অধিক ফলন পাওয়া যায়, তা নিয়ে নিরন্তর গবেষণা করছেন কৃষি-বিজ্ঞানীরা। সেই গবেষণার অঙ্গ হিসেবে যে কোনও জমিতে ভাল ফলন পেতে এ বার বর্ষার মরসুমে হুগলির হরিপালে ‘সিস্টেম অব অ্যাসিওর্যান্স রাইস প্রোডাকশন’ (সার্প) বা ‘সুনিশ্চিত ধান’ চাষ শুরু হয় কৃষি দফতরের তত্ত্বাবধানে। সেই ধান কাটা এখন শুরু হয়েছে। কৃষি দফতরের দাবি, চাষিরা এই পদ্ধতির সুফল পাচ্ছেন।
‘সার্প’ কী?
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, প্রচলিত পদ্ধতির মতো এ ক্ষেত্রেও এক একর জমির জন্য দশ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু বীজ অনেক কম ফেলা হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ গ্রাম বীজ ফেলা হয়। তাতে চারার সংখ্যা হয় প্রায় দু’হাজার। এ ক্ষেত্রে সম পরিমাণ জমিতে বীজ ফেলা হয় ১০ গ্রাম। ফলে চারার সংখ্যা হয় শ’চারেক। স্বভাবতই চারা বেড়ে ওঠার জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি জায়গা পাওয়া যায়। বৃদ্ধি ভাল হয়। আর জৈব সার বেশি ব্যবহার করা হয়। রাজ্যের অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা (গবেষণা) সম্পদরঞ্জন পাত্র বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থায় বীজতলা বলিষ্ঠ এবং শক্তসামর্থ হয়। সঞ্চিত শক্তি এবং হরমোনের পরিমাণ বেশি হয়। তাই, মূল জমিতে রোপণ করা হলে অত্যন্ত ভাল ফসল মেলে।’’
কৃষি বিজ্ঞানীদের দাবি, জিরো-টিলেজ, ড্রাম সিডার বা শ্রী পদ্ধতি বিদেশে গবেষণালব্ধ। সার্প পুরোপুরি এ রাজ্যেই গবেষণা হয়েছে। সেই গবেষণা হয়েছে নদিয়ার রানাঘাট জল ও সেচ গবেষণা কেন্দ্রে তৎকালীন সেখানকার যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা সম্পদবাবুর নেতৃত্বে। হরিপাল ব্লক কৃষি দফতরের তত্ত্বাবধানে চলতি আমন মরসুমে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে (সার্প) চাষ হয়েছে।