দীর্ঘদিনের দাবি মেনে শক্তপোক্ত ভাবে বাঁধ সংস্কার শুরু করেছে হুগলি জেলা প্রশাসন। আগামী বছর বর্ষায় মানুষজনকে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না বলে দাবি আরামবাগ মহকুমা প্রশাসনের।
এক দিকে ১০০ দিন প্রকল্পে যেমন বাঁধ সংস্কার শুরু হয়েছে, তেমনি সেচ দফতরও কাজ করছে। ১০০ দিন প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার কমলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘১০০ দিন প্রকল্পে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বর্ষার আগেই বাঁধে লাগানো ঘাস বা গাছ গজিয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে বাঁধও শক্তপোক্ত হবে বলে আশা করছি।’’
আরামবাগ মহকুমার ৬টি ব্লকের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর এবং রূপনারায়ণ। মোট ৬৩টি পঞ্চায়েত এলাকার ৫৩টিই বন্যা কবলিত বলে সরকারিভাবে চিহ্নিত। এমনকী আরামবাগ পুরসভার ১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডও বর্ষায় জলমগ্ন হয়। আরামবাগ মহকুমায় এই চারটি নদ-নদীর বাঁধের মোট এলাকা ২৪০ কিমির মতো। এর মধ্যে সেচ দফতরের অধীনে প্রায় ১০০ কিমি। বাকি পঞ্চায়েত সমিতি দেখভাল করে। ব্লক প্রশাসনগুলির দাবি, নদীবাঁধগুলির প্রায় ৪০ শতাংশ সংস্কার জরুরি। এ ছাড়াও খানাকুলের চিংড়া থেকে মোস্তাফাপুর ১৪ কিমি হাওড়া-আমতা ডিভিশনে পড়ে। গত বর্ষায় শুধুমাত্র দ্বারকেশ্বর নদের জলে খানাকুলের গুজরাট এবং ঘাসুয়ায় দু’টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে গিয়েছে।
এতদিন আরামবাগ মহকুমার মানুষের মূল অভিয়োগ ছিল, প্রতিবছর নিয়ম করে বর্ষার মুখে জুন মাস নাগাদ বাঁধ মেরামতের কাজ করে। ফলে অশক্ত বাঁধ সামান্য জলের তোড়েই হয় ভেঙে যায়, নয়তো ধসে যায়। এর পিছনে ঠিকাদার-ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের অশুভ আঁতাঁতও থাকে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কিন্তু এ বার নভেম্বর মাসেই কাজ শুরু হতে দেখে খুশি এলাকাবাসী। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের মধ্যেই বিভিন্ন নদী বাঁধের দুর্বল, ভাঙা জায়গাগুলি চিহ্নিতকরণ করা এবং ভাঙনের চরিত্র অনুযায়ী কোথায় কীভাবে সংস্কারের কাজ হবে— সে বিষয়ে দ্রুত প্রকল্প জেলায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত ব্লক প্রশাসন এবং মহকুমার সেচ দফতরগুলিকে। বলা হয়েছে, কাজের চরিত্র অনুযায়ী কোথাও ১০০ দিন প্রকল্পে কাজ হবে। কোথাও সেচ দফতরের সঙ্গে ১০০ দিন প্রকল্পের মেলবন্ধনে কাজ হবে। আবার কোথাও সেচ দফতর এককভাবে কাজ করবে।
সেচ দফতরের আরামবাগ মহকুমা সহকারী বাস্তুকার প্রিয়ম পাল বলেন, ‘‘দু’টি ভাঙন মেরামতের পরও ধস নামা বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকার প্রকল্প জেলায় পাঠানো হয়েছে।’’ আর হাওড়া ডিভিশনের আওতায় থাকা খানাকুলের হরিশচক, রঞ্জিতবাটি, চিংড়া প্রভৃতি গোটা পাঁচেক জায়গাতেও ধস আছে। সেগুলিও সংশ্লিষ্ট দফতর মেরামতে উদ্যোগী হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy