Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের মাছের মৃত্যু, প্রশ্নে বটানিক্যাল গার্ডেনের দেখভাল

বটানিক্যাল গার্ডেনের এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে বড় জলাশয়টিই লেরাম লেক। গত শনিবার প্রথম ওই লেকে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছিল।

লেরাম লেকে মরা মাছ। সোমবার, বটানিক্যাল গার্ডেনে। নিজস্ব চিত্র

লেরাম লেকে মরা মাছ। সোমবার, বটানিক্যাল গার্ডেনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০২:২২
Share: Save:

মাত্র এক দিনের ব্যবধানে বটানিক্যাল গার্ডেনের লেরাম লেকে ফের ভেসে উঠল মরা মাছ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, জলে দূষণের কারণেই কি এই মৃত্যু? যদিও গার্ডেন কর্তৃপক্ষের দাবি, রবিবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে লেকের জলের তাপমাত্রার হেরফের হওয়াতেই মাছ মারা গিয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও প্রশ্ন থাকছে, গার্ডেনের ভিতরে থাকা ২৪টি লেকের মধ্যে কেন বারবার লেরাম লেকেই এমন ঘটছে? দ্বিতীয়ত, জলের তাপমাত্রার হেরফের তো অন্য লেকগুলির ক্ষেত্রেও হচ্ছে। কিন্তু সেখানে তো মাছ মারা যাচ্ছে না। এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা অবশ্য মেলেনি কর্তৃপক্ষের তরফে।

বটানিক্যাল গার্ডেনের এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে বড় জলাশয়টিই লেরাম লেক। গত শনিবার প্রথম ওই লেকে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছিল। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই পরিবেশকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, লেক সংস্কারের ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়নি? কেনই বা ঠিক করা হয়নি দীর্ঘ বছর খারাপ হয়ে থাকা গঙ্গার সংযোগকারী লকগেট?

তার পরেই লেরাম লেক থেকে তড়িঘড়ি কচুরিপানা সাফ করতে তৎপর হন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সোমবার ফের ঘটল একই ঘটনা। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশের অভিযোগ, এত বড় ঘটনার পরেও কর্তৃপক্ষের তরফে কারও দেখা মেলেনি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বটানিক্যাল গার্ডেন ডেলি ওয়াকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তাপস দাস বলেন, ‘‘কী কারণে এত মাছ মরছে, তার তদন্ত করতে আজ পর্যন্ত জলের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হল না।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, “আদালতের নির্দেশ না মানার জন্য বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষকে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু করা হবে।’’

এ দিন ফের মরা মাছ ভেসে ওঠার খবর পেয়ে বটানিক্যাল গার্ডেনে আসেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, “আগাছা ও আবর্জনায় গোটা বাগানটা জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব থেকে পুরনো ও বড় বাগান নষ্ট করা হচ্ছে এ ভাবে। আমি বিষয়টি পরিবেশ আদালতের গোচরে আনব।’’

মাছের মৃত্যু নিয়ে গার্ডেনের যুগ্ম-অধিকর্তা মহম্মদ উমর শরিফের দাবি, “রবিবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে লেকের জলের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি কমে গিয়েছিল। জলে অক্সিজেনের পরিমাণ যে কোনও সময়ে বাড়তে বা কমতে পারে। তা হওয়াতেই মাছ মারা যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, মৎস্য দফতরকে ভবিষ্যতে লেকের জল পরীক্ষা করার জন্য জানানো হবে।

কিন্তু জলের তাপমাত্রার পরিবর্তনে লেরাম লেকে মাছ মরলেও একই ঘটনা তো বাকি ২৩টি লেকে ঘটছে না? তা হলে কি জলে দূষণের জন্য এমন হল? যুগ্ম-অধিকর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন লেকে জলের অক্সিজেনের মাত্রার কখন পরিবর্তন ঘটবে বলা যায় না। কাল বৃষ্টির জন্য এই পরিবর্তন কি না, পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Botanical Garden Water Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE