Advertisement
E-Paper

বহরে বেড়েছে শহর, উন্নতি হয়নি নিকাশির

একেবারে পাশাপাশি রয়েছে রেল ও সড়কপথ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বাগনান, স্টেশন থেকে উত্তর দিকে মাত্র আধ কিলোমিটারের ব্যবধানে জেলার বুক চিরে চলে গিয়েছে মুম্বই রোড তথা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন সুবিধাই বাগনানকে নতুন করে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। ১৯৬২ সালে তৈরি হয়েছে মুম্বই রোড। আগে এই রাস্তা পরিচিত ছিল ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড বা ওটি রোড নামে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫২
বেহাল নিকাশি। পাশে, গড়ে উঠছে বহুতল।

বেহাল নিকাশি। পাশে, গড়ে উঠছে বহুতল।

একেবারে পাশাপাশি রয়েছে রেল ও সড়কপথ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বাগনান, স্টেশন থেকে উত্তর দিকে মাত্র আধ কিলোমিটারের ব্যবধানে জেলার বুক চিরে চলে গিয়েছে মুম্বই রোড তথা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক।

যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন সুবিধাই বাগনানকে নতুন করে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। ১৯৬২ সালে তৈরি হয়েছে মুম্বই রোড। আগে এই রাস্তা পরিচিত ছিল ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড বা ওটি রোড নামে। সংকীর্ণ ওটি রোডকেই সংস্কার করে নির্মিত হয় মুম্বই রোড। সাবেক ওটি রোডের কিছুটা অংশ কিন্তু বাগনানেই থেকে গিয়েছে। মুম্বই রোডের সমান্তরাল এই রাস্তাটির বিস্তার বাগনান লাইব্রেরি মোড় থেকে মানকুর মোড় পর্যন্ত। থানার সামনে ওটি রোড থেকে বেরিয়ে স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছে আরও একটি রাস্তা যা স্টেশন রোড (উত্তর) নামে পরিচিত।

বাগনানের নগরায়ন শুরু হয় ওটি রোড এবং স্টেশন রোড এই দুই রাস্তাকে কেন্দ্র করে। দু’টি রাস্তারই দু’পাশে একের পর এক দোকান-পসারি গড়ে ওঠে। তৈরি হতে শুরু করে বহুতল। কয়েক বছরের মধ্যেই শহর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে বেড়াবেড়িয়া, বাগনান এনডি ব্লক, মুরালিবাড়, খালোড়ে। নগরায়নের এই দাপটের কারণ? বাগনান-আমতা, বাগনান-মানকুর ও বাকসি এবং বাগনান-শ্যামপুর রোড, এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বাগনানকে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। বাস, অটো রিকশা, ট্রেকার, ছোট গাড়ি সকাল থেকে সন্ধে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নিত্যযাত্রী, ব্যবসায়ী ও কারবারিদের শহরে এনে উগরে দেয়। বাগনান স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে তাঁরা শহরতলিতে যাতায়াত করেন। ফের ট্রেন ধরে বাগনানে ফিরে আসেন।

তবে বাগনানের দ্রুত নগরায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা। শহরের চারপাশে পর পর বহুতল নির্মাণ চললেও সেই অনুপাতে নিকাশি গড়ে তোলা হচ্ছে না। ফলে বর্ষা দূরের কথা, এনডি ব্লক, বেড়াবেড়িয়া প্রভৃতি এলাকার মানুষ অন্য সময়েও আকাশে মেঘ দেখলে প্রমাদ গোনেন। কারণ, রাস্তায় হাঁটুজল জমতে এর পশলা বৃষ্টিই যথেষ্ট। বাসিন্দাদের তখন ঘরবন্দি হয়ে পড়া ছাড়া উপায় থাকে না।

বাসস্ট্যান্ড। ছবি: সুব্রত জানা।

বেড়াবেড়িয়ায় রেজিস্ট্রি অফিস গলি নামে পরিচিত রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য বাড়ি, দোকান, জমি কেনাবেচার জন্য সাব রেজিস্ট্রি অফিস, ডাকঘর, ব্যাঙ্ক প্রভৃতি। স্থানীয় বাসিন্দারা এই এলাকাকে মিনি অফিসপাড়াও বলে থাকেন। দিরভর কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত এখানে। কিন্তু বৃষ্টি হলে দূরবস্থার শেষ থাকে না মানুষের। একই অবস্থা এনডি ব্লকের।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এইসব এলাকা এক সময় ছিল নিচু জমি। পরে যে যার মতো মাটি ফেলে বাড়ি তৈরি করেছেন। জমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির জল জমে যাচ্ছে, তা বের করে দেওয়ার জন্য যে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার দরকার ছিল তা করা হয়নি। সাবেক নিকাশি খালগুলিরও সংস্কার করা হয়নি। একইভাবে মানুষ নাকাল হচ্ছেন যানজট সমস্যাতেও। অনেক আগে সাবেক বাসস্ট্যান্ড ছিল স্টেশনের সামনে। বাগনান-মানকুর ও বাগনান-উলুবেড়িয়া এই দু’টি রুটের বাস তখন এই স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ত। আটের দশকের গোড়ায় রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়। ফলে আরও নতুন নতুন রুটে বাস চলাচল শুরু হয়। তখন পুরনো জায়গা থেকে সরে যায় বাসস্ট্যান্ডটি। আরও পূর্ব দিকে অনেকটা বড় পরিসরে নয়া বাসস্ট্যান্ড তৈরি করে জেলা পরিষদ। রক্ষণাবেক্ষণও করে তারাই। কিন্তু সেখানেও এখন স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। সব মিলিয়ে গাড়ি এবং যাত্রীর ভিড়ে বাসস্ট্যান্ডে পা রাখার জায়গা থাকে না। বাসস্ট্যান্ডে ঢোকা এবং বেরোনর পথ সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়ি ঢুকতে ও বেরোতেই মিনিট পনেরো সময় লেগে যায়। ফলে বাসস্ট্যান্ডের দুই দিকে ব্যাপক যানজট হয়। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায় দুর্বিষহ অবস্থা হয়।

amar shohor southbengal bagnan nurul absar drainage problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy