এই সেতুতেই ঘটে দুর্ঘটনা। ইনসেটে শুভেন্দু।—নিজস্ব চিত্র।
বেঁচে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু হারিয়েছেন কোলের নিধি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ নাগাদ যখন বছর চারেকের শুভেন্দুকে নিয়ে সাইকেলে খাল পার হচ্ছিলেন তনুশ্রী মান্না, তখন অল্প বৃষ্টি হচ্ছিল। জোরে হাওয়াও দিচ্ছিল। খালের উপর কাঠের সেতুর দু’পাশে কোনও রেলিং নেই। তার উপর জোয়ারের জলে রূপনারায়ণের সঙ্গে যুক্ত খাল টইটম্বুর। আশপাশের লোকজন বার বার তনুশ্রীকে নিষেধ করেন সাইকেলে খাল পার হতে। হেঁটে পার হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তা শোনেননি তনুশ্রী। রোজই তো এই পথে যাওয়াআসা করেন। খালও পার হন। আজও ঠিক পার হয়ে যাবেন ভেবেই নিষেধ না শুনে সাইকেলেই পার হতে যান। কিন্তু বৃষ্টিতে সেতুর ভিজে কাঠের পাটাতনে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। সাইকেল কাত হয়ে গেলে খালে পড়ে যায় শুভেন্দু। ছেলেকে বাঁচাতে সাইকেল ফেলে খালে ঝাঁপ দেন তনুশ্রীও। কিন্তু কোথায় ছেলে?
চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে আশপাশের লোকজন জলে ঝাঁপিয়ে তনুশ্রীকে উদ্ধার করেন। কিন্তু পাওয়া যায়নি শুভেন্দুকে। বিস্তর খোঁজাখুজির পর বিকেল ৫টা নাগাদ তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রেলিং না থাকাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার উপর সেতুটিও স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি নয়। মায়াচরের এই এলাকায় অনেক ইটভাটা রয়েছে। নিজেদের প্রয়োজনেই তারা কাঠের সেতুটি বানিয়েছেন। বাসিন্দারাও সেটাই ব্যবহার করেন। এ দিন দুর্ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই পাকা সেতুর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
ছোট্ট শুভেন্দুর মৃত্যুতে এ দিন এলাকায় শোকের ছায়া নামে। বাবা উত্তম কলকাতায় একটি গ্লাভস তৈরির কারখানায় কাজ করেন। জানালেন, তনুশ্রী মাস তিনেক হল সাইকেল চালানো শিখেছেন। রোজই ছেলেকে সাইকেলে আনতেন। শেষ পর্যন্ত সাইকেল আর নিষেধ না শোনাটাই কাল হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy