Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অভাব সঙ্গী, মাধ্যমিকে ৯১ শতাংশ সাবিকার

ছোট থেকে অভাব সঙ্গী। তার পড়াশোনার খরচ জোগানোর জন্য অন্যের কাছে বাবাকে হাত পাততে দেখেছে সে। আর তাতে জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জেদটা চেপে বসেছে খানাকুলের কাঁটাপুকুর গ্রামের সাবিকা ইয়াসমিনের। অভাবের সংসারে একা পড়ে পাতুল গণেশবাজার হাইস্কুলের এই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৩৭।

অদম্য: সাবিকা ইয়াসমিন। নিজস্ব চিত্র

অদম্য: সাবিকা ইয়াসমিন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খানাকুল শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

ছোট থেকে অভাব সঙ্গী। তার পড়াশোনার খরচ জোগানোর জন্য অন্যের কাছে বাবাকে হাত পাততে দেখেছে সে। আর তাতে জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জেদটা চেপে বসেছে খানাকুলের কাঁটাপুকুর গ্রামের সাবিকা ইয়াসমিনের। অভাবের সংসারে একা পড়ে পাতুল গণেশবাজার হাইস্কুলের এই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৩৭।

খানাকুলের বন্যাপ্লাবিত পোল অঞ্চলের কাঁটাপুকুর গ্রামের সাবিকার বাবা বছর তিপান্নর মহম্মদ সরাদ্দি বেকার। নিজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স নিয়ে পড়েও কোনও কাজ পাননি। জমানো কিছু টাকায় তিন বন্ধুর সঙ্গে যৌথভাবে হাওড়ায় রুটির কারখানা করতে গিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন। তারপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। মহম্মদের কথায়, ‘‘স্ত্রী এবং দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে কিছু কাজ করি। কখনও জোটে, কখনও খালি হাতে ফিরতে হয়। ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। কিন্তু সাবিকাকে নিয়ে আমারও অনেক আশা।’’ আর সাবিকার মা কোনও কথা বলেন না। শুধু চোখের জল ফেলেন।

সাবিকা বিজ্ঞান নিয়ে প়ড়ার পরিকল্পনা করেছে। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় সে। তার কথায়, ‘‘চিকিৎসক হয়ে যারা গরিব তাদের জন্য কাজ করতে চাই।’’

সাবিকাকে সাহস জোগাচ্ছেন স্কুলের শিক্ষক আর পড়শিরা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুশান্তকুমার দলুই, শিক্ষক শেখ রিজাবুল ইসলাম বলেন, ‘‘অনটনের মধ্যেও কখনও ভেঙে পড়েনি সাবিকা। প্রতিদিন স্কুল এসেছে। ৯১ শতাংশ নম্বরের জন্য ওর লড়াইটা কম ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Examination 2018 Poverty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE