Advertisement
০২ মে ২০২৪
বাজার চাহিদা যথেষ্ট

বিকল্প আয়ে রঙিন মাছ চাষে উৎসাহী চাষিরা

মিষ্টি জলে সাধারণ মাছ চাষ তো রয়েছেই। পাশাপাশি রঙিন মাছ চাষ করে মাছচাষিদের এ বার বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছে মৎস্য দফতর। হাওড়ার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক মৎস্য দফতর এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ব্লকে বহু মাছচাষি রঙিন মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন।

পরিচর্যায় চাষি। উলুবেড়িয়ায় সুব্রত জানার তোলা ছবি।

পরিচর্যায় চাষি। উলুবেড়িয়ায় সুব্রত জানার তোলা ছবি।

মনিরুল ইসলাম
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০২:২৪
Share: Save:

মিষ্টি জলে সাধারণ মাছ চাষ তো রয়েছেই। পাশাপাশি রঙিন মাছ চাষ করে মাছচাষিদের এ বার বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছে মৎস্য দফতর। হাওড়ার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক মৎস্য দফতর এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ব্লকে বহু মাছচাষি রঙিন মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। ফলে এলাকায় রঙিন মাছের উৎপাদকের সংখ্যা বাড়ছে বলে দাবি করেছে ব্লক মৎস্য দফতর।

জেলার শহর এলাকায় রঙিন মাছ চাষের রমরমা বাজার। চাহিদা ভাল থাকায় বহু লোক এই চাষের সঙ্গে যুক্ত। রঙিন মাছ চাষ করে অনেকে মাসে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা রোজগার করছেন। তা ছাড়া সাধারণ মাছ চাষের চেয়ে রঙিন মাছ চাষের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। যেমন, বষার্য় পুকুর উপচে মাছ ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, বাড়ির উঠোনেই কয়েক কাঠা জায়গায় চৌবাচ্চা তৈরি করে সেখানে রঙিন মাছ চাষ করা যায়। মহিলারাও নির্বিঘ্নে এই মাছ চাষ করতে পারেন। সরকারি ভর্তুকিও রয়েছে এই মাছ চাষে।

সম্প্রতি উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের উদ্যোগে রঙিন মাছ চাষের এক প্রশিক্ষণ শিবির হয়। শিবিরে জনা পঞ্চাশেক লোক প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন। যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। ব্লকের মৎস্য আধিকারিক নারায়ণ বাগ বলেন, ‘‘এই ব্লকে রঙিন মাছ চাষ নিয়ে মহিলাদেরে মধ্যে খুবই আগ্রহ রয়েছে। রঙিন মাছ চাষিদের সংখ্যাও বাড়ছে। আমাদের তরফে তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ-সহ সমস্ত সহযোগিতা করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারেও এই মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’’

বিডিও তমোজিৎ চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানে মাছচাষিদের মধ্যে রঙিন মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। মাছচাষিদের কাছে এটা বিকল্প আয়ের একটা পথও তৈরি করেছে। তাই রঙিন মাছ চাষে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ধরনের রঙিন মাছ চাষ করা যায়। প্রথমত, এক ধরনের মাছ আছে যে গুলি সরাসরি মাছের চারা দেয়। দ্বিতীয়, যে গুলি ডিম দেয়। সরাসরি বাচ্চা দেয় গুপ্পি, মোলি, প্লিটি, সোর্ড, টেল প্রজাতির মাছ। আর ডিম দেয় গোল্ড ফিশ, অ্যাঞ্জেল, বার্ব, ফাইটার প্রজাতির মাছ। তবে এখানে দ্বিতীয় প্রজাতির মাছেরই বেশি চাষ হয়। রঙিন মাছের মধ্যে গোল্ড ফিশের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে এখানকার মাছ চাষিরা ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে মাছ চাষের দিকে বেশি ঝোঁকেন না। তাঁরা দাশনগর-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট বাচ্চা বা মিন কিনে এনে মাছ চাষ করেন। দিন পাঁচ-সাতেকের মাছের চারা তাঁরা কিনে আনেন। মাস তিন-চারেকের মধ্যে সেগুলি দু-তিন ইঞ্চি বড় হয়। সেই সময় চাষিরা বাজারে বিক্রি করেন।

রঙিন মাছচাষিরা জানান, তাঁরা মাসে পাঁচ-সাত হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারেন। তবে পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক খরচ একটু বেশি হলেও এর একটা বড় অংশ (৪০ শতাংশ) সরকার অনুদান দেয়। হাটগাছা এলাকার সঞ্জীব দাস রঙিন মাছ চাষ করেন। তাঁর নটি চৌবাচ্চা রয়েছে। কয়েক বছর ধরেই তিনি রঙিন মাছ চাষ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘একটু পরিশ্রম করলে রঙিন মাছ চাষ করে মাসে হাজার দশেক টাকা রোজগার সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fish farming Coloured fish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE