Advertisement
E-Paper

হয়নি ফুড পার্ক, ডানকুনিতে সেই জমি পড়ে

বাম আমল থেকেই রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে হুগলির চেহারাটা কঙ্কালসার হতে শুরু করে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৩
ডানকুনিতে প্রায় ২৯ একর জমি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে প্রায় ২৩ বছর ধরে। প্রতীকী ছবি।

ডানকুনিতে প্রায় ২৯ একর জমি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে প্রায় ২৩ বছর ধরে। প্রতীকী ছবি।

শিল্প স্থাপনের জন্য এ রাজ্যে এক লপ্তে অনেকটা জমি পাওয়া দুষ্কর বলে মনে করেন অনেকেই। সেখানে ডানকুনিতে পাঁচিলঘেরা প্রায় ২৯ একর জমি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে প্রায় ২৩ বছর ধরে! কথামতো ফুড পার্ক তো হয়ইনি, ওই জমিতে তৈরি হয়নি নতুন কোনও শিল্পও।

বাম আমল থেকেই রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে হুগলির চেহারাটা কঙ্কালসার হতে শুরু করে। বদল আনতে ডানকুনিকে জেলায় শিল্পের নতুন ঠিকানা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে রাজ্য সরকার। দক্ষিণ রাজ্যধরপুর থেকে সিঙ্গুরের বড়া পর্যন্ত প্রায় ২৯ একর জমিকে পাঁচিলে ঘিরে ফুড পার্ক তৈরিতে উদ্যোগী হয় বাম সরকার। ঠিক হয়েছিল, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই ফুড পার্ক হবে। এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়। ১৯৯৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ওই ফুড পার্কের শিলান্যাস করেন। মাটি ফেলে জমিটি উঁচু করা হয়। যেহেতু হুগলি রাজ্যের অন্যতম আলু উৎপাদক জেলা, তাই সেই সময় সরকারি তরফে প্রতিশ্রুতি ছিল, ওই পার্কে আলুজাত পণ্য তৈরির শতাধিক ছোট ছোট কারখানা তৈরি হবে। বহু মানুষ চাকরি পাবেন। রাজ্যের শিল্পচিত্রে ডানকুনির গুরুত্ব বাড়বে। লাভবান হবেন আলুচাষিরাও।

কিন্তু কোথায় কী! প্রতিশ্রুতিই সার। ফুড পার্ক হয়নি। অন্য শিল্পও আসেনি। চুরি হয়ে গিয়েছে শিলান্যাসের ফলকটিও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে ওই বেসরকারি সংস্থাটিই শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ায় আর ফুড পার্ক হয়নি। যে সব মানুষ কমর্সংস্থানের আশায় দিন গুনছিলেন, তাঁরা হতাশ হন। রাজ্যে পালাবদলের পরে এখনও ওই জমি পাঁচিলঘেরা অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। ডানকুনি শিল্পাঞ্চলেরও তেমন হাল ফেরেনি। দিল্লি রোড এবং দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে কাছে হওয়ায় ফুড পার্কের ওই জমি অন্য শিল্প স্থাপনের কাজে লাগত বলে মনে করেন স্থানীয়েরা।

কী বলছে জেলা প্রশাসন? জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে জেলায় একটি সরকারি উদ্যোগের জন্য আমাদের এক লপ্তে অনেকটা জমির প্রয়োজন। ডানকুনির ওই ফুড পার্কের জমিটি ঠিক কী অবস্থায় আছে, সেই ব্যাপারে খোঁজ নেব।’’ ওই জমিটি ঠিক কী অবস্থায় আছে তা আর জানেন না জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘জমিটি তো এখন দেখি পাঁচিলঘেরা, বড় গেট। সম্ভবত হাতবদল হয়ে গিয়েছে।’’ ফুডপার্ক না-হওয়ায় জন্য সিপিএমকেই দুষেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘ডানকুনি ফুড পার্ক নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু কিছু হয়নি। আমরাই গুরুত্ব দিয়ে শিল্প স্থাপনের কাজ করছি।’’

তবে, সামগ্রিক ভাবে ডানকুনিতে শিল্প স্থাপনে মাথা চাড়া দিয়েছে বেশ কিছু সমস্যাও। শিল্পপতিরা অনেকেই এখন সেই কারণে পিছিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। জমি পেতে দালাল এবং দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য তাঁদের সহ্য করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। মাস কয়েক আগে একটি বিস্কুট কারখানার মালিক তোলাবাজির সমস্যায় পড়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। তিনি তাঁর বিস্কুট কারখানার একটি ইউনিট বাড়াতে গেলে মোটা টাকা তোলা চেয়ে মোবাইলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ।

Dankuni Food Park
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy