চাঁদার জুলুম রুখতে পুলিশি ব্যবস্থার দাবি তাদের অনেক দিনের। গত কয়েক বছরের মতো এ বারেও দুর্গাপুজোর আগে রাজ্য প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়ে ওই আর্জি জানিয়েছিল ট্রাক মালিকদের সংগঠন। কিন্তু যথারীতি রাস্তায় গাড়ি আটকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। দাবিমতো চাঁদা না-দেওয়ায় শুক্রবার রাতে পোলবার মহানাদের কাছে এক লরি চালককে বাঁশ, রড দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে একটি কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনার জেরে ট্রাক মালিকেরা উদ্বিগ্ন। শেখ শাজাহান নামে প্রহৃত ওই ট্রাক চালক চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হুগলি এবং রাজ্যের ট্রাক মালিক সংগঠনের কর্মকর্তা প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই বিলবই হাতে যুবকেরা দাঁড়িয়ে পড়ছে। অনেক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। কেউ বেশি টাকা চাইলে খুবই সমস্যা হয়। জুলুমের প্রতিবাদ করলে কী হয়, পোলবার ঘটনাই তো তার প্রমাণ। এ ভাবে পেটালে আগামী দিনে তো আর চালকই পাব না।’’ তবে, পোলবার ঘটনার পরে পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে বলে ট্রাক চালকদের একাংশ জানিয়েছেন।
চাঁদার জুলুম আটকাতে রাজ্যের ট্রাক মালিক সংগঠন ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে অক্টোবর মাসের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। পরিবহণমন্ত্রী থেকে রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিক, বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার বা কমিশনারদের কাছে চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়। ওই সংগঠন সূত্রের খবর, আবেদনপত্রে চাঁদা তোলা হয়, এমন কিছু জায়গার নাম চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। সেখানে হুগলি জেলার সব থানা এলাকার কথাই বলা হয়েছিল। তার পরেও পোলবার ওই ঘটনা ট্রাক মালিকদের চিন্তায় ফেলেছে। কিছু জায়গায় বিলের বদলে গাড়ির কাচে স্টিকার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের অবশ্য দাবি, এই ধরনের অভিযোগ পেলে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হুগলি জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, পোলবার ঘটনায় অভিযুক্ত এক ক্লাব সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। ওই ক্লাবের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ রাস্তায় নজরদারি করছে। অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সম্প্রতি শ্রীরামপুর থানা এলাকায় কয়েকটি জায়গায় চাঁদা তোলার খবর পেয়ে পুলিশ সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেয়। পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘পুজো-উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাস্তায় চাঁদা তোলা চলবে না। অভিযোগ পেলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ চাঁদা তোলা যাতে না হয়, সে জন্য পুলিশি টহল চলছে বলেও কমিশনারের দাবি। রবিবার পান্ডুয়া, মহানাদ, মগরার বিভিন্ন রাস্তা, অহল্যাবাই রোডের কিছু জায়গায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, পুলিশ টহল দিচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy