Advertisement
E-Paper

গঙ্গাদূষণ রোধে সচেতনতার পাঠ নৌকা ভ্রমণে

ওই নৌকার মাঝিই পর্যটককে বুঝিয়ে দেবেন, খাবার খেয়ে প্লাস্টিকের প্যাকেট জলে ফেলা কেন উচিত নয়। মাছ ধরতে কোন জাল ব্যবহার করা উচিত।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৩
সচেতনতা: জলজ প্রাণী বাঁচাতে নৌকা নিয়ে প্রচার ব্যান্ডেলে। —নিজস্ব িচত্র

সচেতনতা: জলজ প্রাণী বাঁচাতে নৌকা নিয়ে প্রচার ব্যান্ডেলে। —নিজস্ব িচত্র

কুমির, শুশুক, মাছ, কচ্ছপ আঁকা নৌকা নেমেছে ব্যান্ডেলের চাঁদনিঘাটে। একটি নয়। পাঁচ-পাঁচটি। বেড়াতে গিয়ে এক কিলোমিটার দূরের ইমামবাড়া পর্যন্ত সুসজ্জিত ওই নৌকায় ভেসে বেড়ালে গঙ্গা ভ্রমণ উপভোগের সঙ্গে জলজ প্রাণী বাঁচাতে সচেতনতার পাঠও মিলবে।

ওই নৌকার মাঝিই পর্যটককে বুঝিয়ে দেবেন, খাবার খেয়ে প্লাস্টিকের প্যাকেট জলে ফেলা কেন উচিত নয়। মাছ ধরতে কোন জাল ব্যবহার করা উচিত। লক্ষ্য— এমন নানা কথায় গঙ্গাদূষণ রোধে জন-সচেতনতা গড়ে তোলা। কেন্দ্রের ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে ‘ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’র তরফে স্থানীয় পাঁচ মাঝিকে নিয়ে এমনই পরিকল্পনা করা হয়েছে। সোমবার ‘জাতীয় শু‌শুক দিবসে’ চাঁদনিঘাট থেকে তার সূচনা হল। পরিবেশবিদরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তবে তাঁদের বক্তব্য, ব্যাপক ভাবে নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পরিকল্পনা করা দরকার।

‘ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া’ সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের ৩টি, বিহারের ১টি এবং এ রাজ্যের ব্যান্ডেল— এই পাঁচ জায়গায় এমন পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ জন্য মাস ছয়েক আগে ব্যান্ডেল জেলেপাড়ার সত্যেন চৌধুরী, উত্তম মণ্ডল, বিশ্বনাথ প্রামানিক, চিরঞ্জিৎ সরকার এবং রামপ্রসাদ মণ্ডল— এই পাঁচ মাঝিকে দেহরাদূনে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হুগলির ওই দুই পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে এসে যাঁরা ওই নৌকায় উঠবেন, তাঁদের গঙ্গার জীববৈচিত্রের হদিশ দেবেন চিরঞ্জিৎ, বিশ্বনাথরা। তাঁদের পরিচয়— ‘গঙ্গা প্রহরী’। পাঁচটি নৌকা ছাড়াও একটি ছোট লঞ্চ একই ভাবে ব্যবহার করা হবে।

পরিবেশবিদরা জানান, এক সময় গঙ্গায় প্রচুর শুশুক দেখা যেত। দূষণের চোটে প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে। অনেক প্রজাতির মাছেরও আর দেখা মেলে না। বিপন্ন কচ্ছপও। অনেক পাখিও একই কারণে বিপন্নতার শিকার। দূষণ রোধ করে গঙ্গা-সহ বিভিন্ন নদী এবং নদীর উপরে নির্ভরশীল প্রাণীদের বাঁচাতে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশপ্রেমীরা সরব।

সত্যেন বলেন, ‘‘গঙ্গাই আমাদের জীবন। যাত্রী পরিবহণের সঙ্গে সচেতনতা ছড়ানোর জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখব না আমরা। নদী দূষিত হলে সভ্যতাও বাঁচবে না, এটাই বোঝাতে হবে।’’

কয়েক মাস আগে এই জেলার বলাগড়ে একটি মরা শুশুকের দেহ ভেসে ওঠে। দু’বছর আগে চন্দননগর এবং শ্রীরামপুরেও গঙ্গায় তিনটি মরা শুশুকের দেহ ভেসে উঠেছিল। রামপ্রসাদ বলেন, ‘‘গঙ্গা দূষণমুক্ত হলে ফের শুশুক খেলে বেড়াবে। তবে তার জন্য দরকার সচেতনতা। সেই চেষ্টাই করব।’’

গঙ্গা নিয়ে গবেষণা করছেন অর্কজ্যোতি সরকার। তিনি বলেন, ‘‘পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে, খারাপ নয়। গঙ্গার দূষণ রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। পর্যবেক্ষণ করে আমরা দেখেছি, এই এলাকায় গঙ্গায় অনেক শুশুক রয়েছে। দূষণ কমলে এরা এবং অন্য অনেক জলজ প্রাণী বাঁচবে।’’

তাদের বাঁচাতে সচেতনতার পাঠ শেখাতে তৈরি ‘গঙ্গা প্রহরী’।

Pollution Ganga Ganga Pollution River
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy