পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগেই সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাতে আশার আলো দেখছেন হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ধুঁকতে থাকা একমাত্র ইংরেজি মাধ্যম স্কুল— পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির। ২০১০ সাল থেকে ওই স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু হয়। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে এখন সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। চলতি বছরে মাত্র চার জন ছাত্রছাত্রী ইংরেজি মাধ্যমে পরীক্ষায় বসেছিল। চার জনেই অবশ্য প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে।
শনিবারই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য জুড়ে মোট ১০০টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তৈরি হচ্ছে। পিছিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। এই স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগে আলাদা ভাবে উদ্যোগী হচ্ছেন তাঁরা। এ কথা জানার পরেই গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শঙ্কর খাঁড়া বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমলেও আমরা গুণমানের সঙ্গে আপস করিনি। শিক্ষামন্ত্রীর উদ্যোগের ফলে এ বার হয়তো আমরা শিক্ষক পেয়ে যাব। তখন স্কুলের ছবিটাই বদলে যাবে।’’
২০০৯ সালে রাজ্য শিক্ষা দফতর ঠিক করে, প্রতি জেলায় দু’টি করে স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পঠনপাঠন শুরু করা হবে। সেইমতো স্কুলগুলিকে আবেদন করতে বলা হয়। হাওড়া গ্রামীণ এলাকা থেকে আবেদন করেন গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তৎকালীন পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সন্তোষ দাস বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পেরেছিলাম ইংরেজি মাধ্যমের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। তাই আবেদনে সাড়া দিতে দেরি করিনি।’’
পরের বছর স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরুর আগে বিজ্ঞাপন দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেধাবী ছাত্রছাত্রী জোগাড় করেন। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বইও কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। তৈরি হয় আলাদা শ্রেণিকক্ষ। প্রাথমিক ভাবে বাংলা বিভাগের ইংরেজিতে দক্ষ শিক্ষকদের দিয়ে পঠনপাঠন চালানো হয়। বাইরে থেকেও কিছু শিক্ষক আনা হয়। স্কুল চত্বরেই আছে শিক্ষক শিক্ষণ বিভাগ। সেখানে বিএড পড়তে আসা শিক্ষকদের দিয়েও ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালানো হয়। কিন্তু ওই বিভাগের জন্য নতুন করে একজন শিক্ষকও নিয়োগ করা হয়নি। সন্তোষবাবু বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশে আমরা ছ’জন শিক্ষক পাঠানোর জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে আবেদন করি। কিন্তু শিক্ষক পাঠানো হয়নি।’’
জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস সূত্রের খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে গঙ্গাধরপুরের জন্য ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষক চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যায় ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে। একবার দু’জন শিক্ষককে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা অন্য স্কুলে চলে যান।
শিক্ষকের অভাবের কথা ছড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকেরা মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকেন। ধুঁকতে থাকে ইংরেজি মাধ্যমটি। শিক্ষামন্ত্রীর নতুন ঘোষণায় এ বার নতুন শিক্ষকের আশায় দিন গোনা শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy