প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ। শ্রীরামপুরে ডেনিস আমলে তৈরি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ সংস্কারের তৃতীয় পর্যায়ের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হল। সেই আমলে গঙ্গা পাড়ে ঈষৎ হলদেটে যে ভবনগুলি দেখা যেত, অবিকল সে রঙেই ‘গভর্নমেন্ট হাউস’কে সাজানোর পরিল্পনা করা হয়েছে।
সম্প্রতি এ নিয়ে শ্রীরামপুরে এক বৈঠকে সামিল হন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘরের কিউরেটর বেনটে উলফ, সেখানকার হেরিটেজ ইনিশিয়েটিভের স্থাপত্য উপদেষ্টা ফ্লেমিং অল্যান্ড, হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) গৌরব লাল, মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) রজত নন্দা, স্থপতি মণীশ চক্রবর্তী প্রমুখ। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়। তবে, শুধু ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ই নয়, সেই আমলে তৈরি অন্য ভবনগুলিও দ্রুত সংস্কারের জন্য পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। সকলে ভবনগুলি ঘুরেও দেখেন। স্থাপত্যগুলিকে ঘিরে ‘হেরিটেজ জোন’ তৈরির পরিকল্পনা হয়। সংস্কারের পুরো টাকাই দিচ্ছে ওই দেশের জাতীয় জাদুঘর।
১৭৫৫ সাল থেকে শুরু করে বেশ কিছু সময় ধরে গঙ্গা তীরবর্তী শ্রীরামপুর শহরে দিনেমারদের উপনিবেশ ছিল। সেই সময় এই শহরে অনেক স্থাপত্য গড়ে ওঠে। এখন যেখানে কোর্ট, মহকুমাশাসকের দফতর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) বা এআরটিও অফিস-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতর, সেই চৌহদ্দি জুড়ে ছিল ‘গভর্নমেন্ট কম্পাউন্ড’। এই চত্বরে ১৭৭১ সালে তৈরি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ পরবর্তী আড়াইশো বছর ধরে ছিল শ্রীরামপুরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন। জীর্ণ হয়ে পড়ায় ১৯৯৯ সালে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এই ভবন-সহ অন্য জীর্ণ বা ভগ্নপ্রায় স্থাপত্য পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়াস শুরু হয় কয়েক বছর আগে। এ ব্যাপারে ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘর, রাজ্য হেরিটেজ কমিশন এবং হুগলি জেলা প্রশাসনের মধ্য ‘মউ’ সই হয়।