Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুরনো রঙেই সাজবে গভর্নমেন্ট হাউস

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ। শ্রীরামপুরে ডেনিস আমলে তৈরি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ সংস্কারের তৃতীয় পর্যায়ের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হল। সেই আমলে গঙ্গা পাড়ে ঈষৎ হলদেটে যে ভবনগুলি দেখা যেত, অবিকল সে রঙেই ‘গভর্নমেন্ট হাউস’কে সাজানোর পরিল্পনা করা হয়েছে।

চলছে কাজ।— দীপঙ্কর দে।

চলছে কাজ।— দীপঙ্কর দে।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪১
Share: Save:

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ। শ্রীরামপুরে ডেনিস আমলে তৈরি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ সংস্কারের তৃতীয় পর্যায়ের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হল। সেই আমলে গঙ্গা পাড়ে ঈষৎ হলদেটে যে ভবনগুলি দেখা যেত, অবিকল সে রঙেই ‘গভর্নমেন্ট হাউস’কে সাজানোর পরিল্পনা করা হয়েছে।

সম্প্রতি এ নিয়ে শ্রীরামপুরে এক বৈঠকে সামিল হন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘরের কিউরেটর বেনটে উলফ, সেখানকার হেরিটেজ ইনিশিয়েটিভের স্থাপত্য উপদেষ্টা ফ্লেমিং অল্যান্ড, হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) গৌরব লাল, মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) রজত নন্দা, স্থপতি মণীশ চক্রবর্তী প্রমুখ। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়। তবে, শুধু ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ই নয়, সেই আমলে তৈরি অন্য ভবনগুলিও দ্রুত সংস্কারের জন্য পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। সকলে ভবনগুলি ঘুরেও দেখেন। স্থাপত্যগুলিকে ঘিরে ‘হেরিটেজ জোন’ তৈরির পরিকল্পনা হয়। সংস্কারের পুরো টাকাই দিচ্ছে ওই দেশের জাতীয় জাদুঘর।

১৭৫৫ সাল থেকে শুরু করে বেশ কিছু সময় ধরে গঙ্গা তীরবর্তী শ্রীরামপুর শহরে দিনেমারদের উপনিবেশ ছিল। সেই সময় এই শহরে অনেক স্থাপত্য গড়ে ওঠে। এখন যেখানে কোর্ট, মহকুমাশাসকের দফতর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) বা এআরটিও অফিস-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতর, সেই চৌহদ্দি জুড়ে ছিল ‘গভর্নমেন্ট কম্পাউন্ড’। এই চত্বরে ১৭৭১ সালে তৈরি ‘গভর্নমেন্ট হাউস’ পরবর্তী আড়াইশো বছর ধরে ছিল শ্রীরামপুরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন। জীর্ণ হয়ে পড়ায় ১৯৯৯ সালে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এই ভবন-সহ অন্য জীর্ণ বা ভগ্নপ্রায় স্থাপত্য পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়াস শুরু হয় কয়েক বছর আগে। এ ব্যাপারে ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘর, রাজ্য হেরিটেজ কমিশন এবং হুগলি জেলা প্রশাসনের মধ্য ‘মউ’ সই হয়।

সংস্কারের আগের অবস্থা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ঐতিহাসিক গুরুত্বের ‘গভর্নমেন্ট হাউসে’র তৃতীয় পর্যায়ের কাজ পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘টেকনিক্যাল’ কিছু সমস্যার কারণে পরে তা পুরসভাকে দেওয়া হয়। পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় এবং কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ জানান, টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। আগামী মার্চের মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। পুরনো আমলের মতোই অবিকল এক রং করা হবে ওই ভবনের।

সম্প্রতি ভবনগুলি ঘুরে দেখার সময় গভর্নমেন্ট হাউসের পাশে কয়েকটি ভগ্নপ্রায় ঘর ভেঙে ফেলার কথা বলেন ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘরের কিউরেটর বেনটে উলফ। জেলাশাসক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই জায়গায় শৌচাগার কমপ্লেক্স হবে। ঠিক হয় কোর্ট বা মহকুমাশাসকের অফিস-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার জন্য পাশেই অস্থায়ী বিকল্প রাস্তা করা হবে। তার পরে জোরকদমে ‘গভর্নমেন্ট কম্পাউন্ডের’ প্রধীন গেটটির সংস্কারের কাজ চলবে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে কাউন্সিলর সন্তোষবাবুর দাবি। আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ‘ডেনিস ট্যাভার্নে’র কাজ শেষ হওয়ার কথা। সেখানে কফি শপ এবং হস্তশিল্প বা অন্য জিনিস নিয়ে ‘বিশ্ব বাংলা স্টল’ করার প্রস্তাব ওঠে। সংস্কার হওয়া সাউথ গেটে ‘মঞ্জুষা’ বা হস্তশিল্পের স্থায়ী বিপণির প্রস্তাব দেন জেলাশাসক। লকআপের পাশের সেই আমলের একটি ঘরকে অতিথিদের ঘর হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলা হয়।

মহকুমাশাসক রজত নন্দা জানান, সব কিছুই পরিকল্পনা মতো করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ‘মঞ্জুষা’ বা হস্তশিল্পের স্টলের জন্য জে‌লা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Govt. House Reformation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE