Advertisement
১১ মে ২০২৪

প্রতিবাদীকে মার, অধরা অভিযুক্তেরা

কমিশনের নির্দেশের পরও দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি যেমন কমেনি, তেমনই পুলিশ যে অনেক ক্ষেত্রে এখনও সক্রিয় হয়নি ফের তার প্রমাণ মিলল হাওড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৬
Share: Save:

কমিশনের নির্দেশের পরও দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি যেমন কমেনি, তেমনই পুলিশ যে অনেক ক্ষেত্রে এখনও সক্রিয় হয়নি ফের তার প্রমাণ মিলল হাওড়ায়।

এক যুবক বাড়ির পাশে চোলাই মদ বিক্রির প্রতিবাদ করায় ১০-১২ জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে রড, লাঠি ও রাস্তায় পড়ে থাকা সিমেন্টের চাঙড় তুলে নিয়ে আক্রমণ করল। ওই যুবক ও তাঁর দাদাকে মারধরের পাশাপাশি বাধা দেওয়ায় সিমেন্টের চাঙড় দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মেরে থেঁতলে দেওয়া হল ওই যুবকের প্রৌঢ় বাবা-মাকে। ঘটনার পর রাতেই ওই পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হল। কিন্তু অভিযোগ, তার পর এক সপ্তাহ কেটে গেলেও মাত্র একজন অভিযুক্তকে ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তরা না ধরা পড়ায় ঘটনার পর পাড়া ছাড়া পরিবারটি বাড়ি ফিরতে পারছে না।

কিন্তু প্রশ্ন হল, নির্বাচন কমিশন যখন পুলিশ ও প্রশাসনকে নির্বাচনের সময় গোলমাল পাকাতে পারে এমন সব দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে কড়া ভাবে নির্দেশ দিয়েছে তখন এই ঘটনায় পুলিশ কেন দুষ্কৃতীদের ধরতে ব্যর্থ? হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘বিভিন্ন মামলায় প্রতিদিনই ধড়পাকড় চলছে। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে। আশা করি শীঘ্রই ধরা পড়ে যাবে।’’

ভোটের আঁচে যখন সারা রাজ্যের সঙ্গে হাওড়া শহরও তাতছে তখন গত ১৪ তারিখ গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার শিবপুর এলাকার মালিবাগানে। এই এলাকায় চোলাই মদ বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। পুলিশ মাঝে মাঝে ধর পাকড়ও করত। কিন্তু পরের দিনই জামিন পেয়ে ফের চোলাই বিক্রি করত দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি এই নিয়ে সুশান্ত ধাড়া নামে এক যুবকের সঙ্গে চোলাই বিক্রেতাদের গোলমাল চরমে ওঠে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৪ তারিখ রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ১০-১২ জনের সশস্ত্র একটি দল সুশান্তবাবুর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। সুশান্তবাবু জানান, ওই দুষ্কৃতীরা ঢুকে প্রথমে তাঁর দাদা সাগর ধাড়াকে আক্রমণ করে। খাওয়া ছেড়ে দাদাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে লাঠি রড দিয়ে মারধর শুরু করে আক্রমণকারীরা। ওই সময় তাঁর বাবা শ্রীকান্ত ধাড়া ও মা ছবি ধাড়া দুষ্কৃতীদের সামনে রুখে দাঁড়ান। ওই সুযোগে প্রাণ বাঁচাতে দুই ভাই গলির ভিতর একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ছেলেদের না খুঁজে পেয়ে দুষ্কৃতীরা প্রৌঢ় শ্রীকান্তবাবু ও ছবিদেবীকে মারতে মারতে রাস্তায় নিয়ে যায়। এর পর রাস্তায় পড়ে থাকা সিমেন্টের চাঙড় দিয়ে শ্রীকান্তবাবু ও ছবিদেবীর মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়াগায় আঘাতের পর আঘাত করে। সুশান্তবাবুর অভিযোগ, ঘটনার পর বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত নামে এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘‘চোলাই বিক্রির প্রতিবাদ করতাম বলে আমাকে ও আমার পরিবারকে শেষ করে দিতে চেয়েছি ওরা। পুলিশ দুষ্কৃতীদের না ধরায় ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE