Advertisement
E-Paper

ফের তপ্ত হরিণখোলা, অচলাবস্থা পঞ্চায়েতে

দলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে নিহত যুব তৃণমূল কর্মী শেখ ইসরাইল খানের মৃতদেহ শুক্রবার রাতে গ্রামে ফিরতেই আরামবাগের হরিণখোলার দু’টি অঞ্চল ফের তেতে উঠল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০২:৫২
অশান্তি: ধৃতদের আরামবাগ আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (বাঁ দিকে)। ভাঙচুর হওয়া স্কুটি ও একটি বাড়ির ভিতরের অবস্থা। হরিণখোলার ঘোলতাজপুরে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

অশান্তি: ধৃতদের আরামবাগ আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (বাঁ দিকে)। ভাঙচুর হওয়া স্কুটি ও একটি বাড়ির ভিতরের অবস্থা। হরিণখোলার ঘোলতাজপুরে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

অশান্তি অব্যাহত হরিণখোলায়। যার জেরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এলাকার দুই পঞ্চায়েতে।

দলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে নিহত যুব তৃণমূল কর্মী শেখ ইসরাইল খানের মৃতদেহ শুক্রবার রাতে গ্রামে ফিরতেই আরামবাগের হরিণখোলার দু’টি অঞ্চল ফের তেতে উঠল। মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ তাইবুল আলি এবং তাঁর অনুগামী ৮ কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠল দলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা তথা হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আজিজ খান ওরফে লাল্টুর নেতৃত্বে।

গোলমালের কথা শুনে এলাকায় পুলিশ যায়। তবে, কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট চলছে। খুনের ঘটনাতে নতুন করে আর কেউ গ্রেফতার হয়নি। মূল অভিযুক্ত তাইবুল এখনও পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।

শুক্রবারের গোলমালে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে লাল্টুর দাবি, “জনরোষে কিছু অশান্তি হলেও হতে পারে। তবে, ঘটনার সঙ্গে আমার বা দলের কোনও যোগ নেই।” হরিণখোলায় ফের অশান্তি নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “গ্রামে কেউ অশান্তি করলে, সে যে-ই হোন, পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার সকালে হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের ঘোলতাজপুরে শাসকদলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুব সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজি হয়। বোমার আঘাতে বাড়ির কাছেই মৃত্যু হয় দলের যুবকর্মী ইসরাইলের। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ হরিণখোলায় পৌঁছয়। সেখানে আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডে শববাহী গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ-অবরোধ হয়। পুলিশ এবং দলের নেতারা গিয়ে
পরিস্থিতি সামলান।

রাত ৮টা নাগাদ মৃতদেহ ঘোলতাজপুরে পৌঁছয়। পরিবারের লোকজন যখন অন্ত্যেষ্টির আয়োজন করছিলেন, সেই সময় তাইবুল (তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের অঞ্চল সভাপতি) ও বিভিন্ন গ্রামে তাঁর আট অনুগামীর বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানোর অভিযোগ ওঠে দলেরই যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির মহিলাদের অভিযোগ, আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ছাড়াও সোনার গয়না, আলুর বন্ড, পাখা, গ্যাস সিলিন্ডার, মোটরবাইক, সাইকেল, এমনকি, গরু-ছাগলও নিয়ে পালায় লাল্টুর দলবল।

বৃহস্পতিবার বোমাবাজি এবং ইসরাইলের মৃত্যুর পর থেকেই ঘোলতাজপুর সংলগ্ন হরিণখোলা-১ ও ২ পঞ্চায়েতের ১০টি গ্রাম
থমথমে হয়ে রয়েছে। আমগ্রাম, তাজপুর, ঘোলতাজপুর, মধুরপুর, সারাটি, পূর্ব কৃষ্ণপুর ইত্যাদি গ্রাম থেকে দলের মূল সংগঠনের প্রায় ৮০ জন নেতাকর্মী ঘরছাড়া হয়েছেন বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি।

এই পরিস্থিতিতে হরিণখোলা-১ এবং হরিণখোলা-২ পঞ্চায়েতে ফের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দুই পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, আতঙ্কে সদস্যেরা অনেকেই আসছেন না। কর্মীরাও ভীতসন্ত্রস্ত। ফলে, গ্রামোন্নয়নের কাজ মার খাচ্ছে। গ্রামবাসীরা পরিষেবা পেতেও সমস্যায় পড়ছেন। দুই অঞ্চলের বিরামহীন রাজনৈতিক ডামাডোল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্লক প্রশাসনও।

খুনের ঘটনায় ধৃত চার জনকে শনিবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের মধ্যে ইদ্রিশ আলি, শেখ সম্রাট বাবর এবং শেখ সামসুর রহমানের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বাকি মূল অভিযুক্ত তাইবুলের বাবা বৃদ্ধ হিদায়েত আলির ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়।

Harinkhola TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy