Advertisement
E-Paper

গৌরীকে নিয়ে সংসার করতে চেয়েছিল বিজয় 

হিন্দমোটর-কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, ন’মাস ধরে নিহত সুবোধ হাজরার সঙ্গে তাঁর স্ত্রী গৌরী এবং গৌরীর প্রেমিক বিজয় সিংহ ওরফে সুরজিতের অশান্তি চলছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গোলমালের শুরু গত বছরের ডিসেম্বরে!

হিন্দমোটর-কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, ন’মাস ধরে নিহত সুবোধ হাজরার সঙ্গে তাঁর স্ত্রী গৌরী এবং গৌরীর প্রেমিক বিজয় সিংহ ওরফে সুরজিতের অশান্তি চলছিল। চল্লিশোর্ধ্ব গৌরীকে নিয়ে পালিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন ছিল বছর একুশের বিজয়ের। সে সব সুবোধ জেনে ফেলেছিলেন। এ থেকেই অশান্তি।

কী ভাবে ওই সম্পর্কের কথা জানলেন সুবোধ?

তদন্তকারীরা জানান, ধৃত গৌরী ও বিজয়কে জেরায় জানা গিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে একদিন গৌরী যখন বিজয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলায় মগ্ন, তখন সুবোধ তা শুনে ফেলেন। গৌরী তাঁর বাড়ির মোবাইলে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলত না। কারও যাতে সন্দেহ না হয়, সে জন্য গৌরীকে মোবাইল কিনে দিয়েছিল বিজয়। বিষয়টি নিয়ে পরিবারে আলোচনা হয়। গৌরী নিজের ‘ভুল’ মেনে নেয়। বিজয়ের সঙ্গে আর কথা বলবে না বলে জানায়।

পরে সুবোধ স্ত্রীকে একটি মোবাইল কিনে দেন। তাতে ‘কল-রেকর্ডিং’ চালু করা ছিল। কিছু দিন পরে মোবাইলটি ঘেঁটে সুবোধ বুঝতে পারেন, বিজয়ের সঙ্গে গৌরীর রীতিমতো যোগাযোগ রয়েছে। ‘কল-রেকর্ডিং’-এ দু’জনের কথোপকথনে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঘর বাঁধার কথাও হয়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গৌরী-বিজয়ের সম্পর্কে ছেদ পড়েনি বলে হাজরা পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে বিজয়ের সঙ্গেও মাঝেমধ্যেই সুবোধের ঝগড়াঝাঁটি হত।

চন্দননগর কমিশনারেটের তদন্তকারীরা মনে করছেন, গৌরীর সঙ্গে সম্পর্ক না-রাখার জন্য চাপ দেওয়াতেই সুবোধের উপর প্রবল আক্রোশ জন্মায় বিজয়ের। সেই কারণেই সে বছর আটচল্লিশের সুবোধকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। শুক্রবার গভীর রাতে হিন্দমোটরের বিবি স্ট্রিটে নিজের ফ্ল্যাটেই খুন হন সুবোধ। তাঁর গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। ধৃত বিজয় ও গৌরী অপরাধের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। তবে, রবিবার বিকেল পর্যন্ত খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। সেটির খোঁজ এবং খুনের আগে বিজয়ের সঙ্গে গৌরীর কী কথা হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।

এই হত্যাকাণ্ডের জেরে এলাকাবাসীর রাগ গিয়ে পড়ে আশপাশের গুমটি এবং একটি ক্লাবের উপর। শনিবার রাতে সেগুলি ভাঙচুর করা হয়। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ওই গুমটি এবং ক্লাবের পাশের মাঠে মদ-গাঁজার আসর বসত। এলাকার কিছু ছেলের মদতে অসামাজিক কাজে যুক্ত বাইরে থেকে আসা যুবকেরা ওই আসরে ভিড় করত বলে অভিযোগ। গৌরীর সঙ্গে আগে অন্য যুবকের সম্পর্কের অভিযোগও তোলেন কেউ কেউ। এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে মেয়েরা রাস্তায় চলাফেরা করতে ভয় পায়। সুবোধ খুনের পরে ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে।’’

শনিবার সকালে উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর ক্ষোভের বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’ পুলিশের বক্তব্য, এলাকায় টহলদারি চলে। তবে মদ-গাঁজার আসর এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েনি। ওই এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হবে।

HIndmotor Uttarpara হিন্দমোটর উত্তরপাড়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy