Advertisement
E-Paper

কানহাইয়াকে পদে পদে বাধা হুগলিতে

সওয়া চারটে নাগাদ শ্রীরামপুরের ধর্মতলা এলাকায় কানহাইয়ার কনভয় আক্রান্ত হয়। অভিযোগ, বিজেপির লোকজন লং মার্চে অংশগ্রহণকারীদের দিকে পাথর ছোড়ে। তাতে কয়েক জ‌ন জখম হন।

প্রকাশ পাল ও শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৭
বক্তা: শ্রীরামপুরের সভায় কানহাইয়া কুমার। নিজস্ব চিত্র

বক্তা: শ্রীরামপুরের সভায় কানহাইয়া কুমার। নিজস্ব চিত্র

পদে পদে বাধা, বিক্ষোভ, মারমুখী আস্ফালন।

সিপিআইয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার বুধবার হুগলিতে ঢোকামাত্র পথে নেমে পড়ল বিজেপি এবং তাদের ছাত্র সংগঠন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কোথাও পুলিশকে লাঠি চালাতে হল, কোথাও নামাতে হল র‌্যাফ।

‘লং মার্চ’ কর্মসূচিতে এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ উত্তরপাড়ায় ঢোকেন কানহাইয়া। প্যারীমোহন কলেজের কাছে জিটি রোডে শ’খানেক বিজেপি এবং এবিভিপি সমর্থক তাঁর গাড়ি আটকান। কালো পতাকা নিয়ে তাঁরা গাড়ির সামনে বসে পড়েন। পুলিশ টেনেহিঁচড়ে তাঁদের সরালে কানহাইয়ার গাড়ির পিছনে দৌড়তে শুরু করে‌ন বিক্ষোভকারীরা। ঘণ্টাখানেক পরে ফের কানহাইয়া এবং লং মার্চের ক্যারাভ্যান বাধা পায় রিষড়ার বাগখালে। এখানে সিপিআইয়ের ছাত্র ও যুব সংগঠন (এআইএসএফ এবং এআইওয়াইএফ) কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। শ্রীরামপুরের ওয়েলিংটন চটকলের সামনে কানহাইয়ার জন্য সংবর্ধনার ব্যবস্থা হয়েছিল। সেখানেও বিজেপি সমর্থকরা চড়াও হন। দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে গেলে বিজেপির লোকজনের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ লাঠি চালায়।

সওয়া চারটে নাগাদ শ্রীরামপুরের ধর্মতলা এলাকায় কানহাইয়ার কনভয় আক্রান্ত হয়। অভিযোগ, বিজেপির লোকজন লং মার্চে অংশগ্রহণকারীদের দিকে পাথর ছোড়ে। তাতে কয়েক জ‌ন জখম হন। শ্রীরামপুর থানার এক সাব-ইনস্পেক্টরও পাথরের ঘায়ে আহত হন। লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামলায় পুলিশ। ওয়েলিংটন এবং ধর্মতলার ঘটনায় ২২ জন বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিকেলে শ্রীরামপুরের টাউন হলে সভা করেন কানহাইয়া।

পথে কানহাইয়াকে নিয়ে ভালই উৎসাহ ছিল। টাউন হলের বাইরে শ্রীরামপুর পুরভবন চত্বরে বড় টিভি লাগানো হয়েছিল। সভায় দেখা গিয়েছে একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলরকেও। চাঁপদানি বাজার, ফাঁড়ির মোড়েও উৎসাহী লোকজন রাস্তার ধারে ভিড় জমান। কানহাইয়ার বিরোধিতায় ভদ্রেশ্বর গেট বাজারে বিকেলে আধ ঘণ্টা জিটি রোড অবরোধ করে বিজেপি।

বিজেপির এহেন বিরোধিতায় মজাই পেয়েছেন জেলা সিপিআই নেতৃত্ব। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘এখন আমাদের সংগঠন ভঙ্গুর। বিজেপি আমাদের মরা গাঙে এক দিনের জন্য হলেও জোয়ার এনে দিল।’’ পক্ষান্তরে, জেলা বিজেপি সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘কানহাইয়া দেশবিরোধী কথা বলেন। সেই জন্য যুব মোর্চা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সিপিআই গোলমালে প্ররোচনা দিয়েছে।’’

এ দিন হাওড়ার বালি হয়ে হুগলিতে ঢোকেন কানহাইয়ারা। সকাল থেকেই বালি ৫৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের অস্থায়ী মঞ্চের চারপাশ ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ বাহিনী। উল্টো দিকের ফুটপাথে ও বাড়ির ছাদে ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। এখানে ওই ছাত্রনেতাকে তেমন কোনও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গেই সাধারণ মানুষের ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। নিমতলা, বালিঘাট, বালিখাল মোড়ের দিকেও জড়ো হচ্ছিলেন বিজেপির কর্মীরা। খবর পেয়েই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। তারা স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের চিহ্নিত করে সভাস্থল ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কয়েকজন তা মানতে না চাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে বচসা হয়। পুলিশের তাড়া খেয়ে পালান বিজেপি কর্মীরা।

উত্তরপাড়া থেকে এআইএসএফ-এআইওয়াইএফ-এর পতাকা লাগানো এক বিরাট বাইকবাহিনী হাতে লাঠি নিয়ে হাজির হয়েছিল বালিতে। তবে, শেষ পর্যন্ত অবশ্য তেমন কোনও গোলমাল হয়নি।

Kanhaiya Kumar west bengal Jawaharlal Nehru University কানহাইয়া কুমার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy