Advertisement
E-Paper

জটিলতা কাটিয়ে এ বার বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় খুশবু

ভবঘুরে মহিলাকে দেখেই প্রথমে খটকা লেগেছিল সাইদুরের। কথা বলে ধারণা আরও স্পষ্ট হয়। বুঝতে পারেন, মহিলা কোনওভাবে পথ হারিয়েছেন। তবে সব জটিলতা কেটেছে পুলিশি হস্তক্ষেপে। আর তাই খুশবু কুমারী নামের ওই ভবঘুরে এখন বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০১:৩১
ফেরা: মহিলার কনস্টেবলদের সঙ্গে খুশবু। নিজস্ব চিত্র

ফেরা: মহিলার কনস্টেবলদের সঙ্গে খুশবু। নিজস্ব চিত্র

ভবঘুরে মহিলাকে দেখেই প্রথমে খটকা লেগেছিল সাইদুরের। কথা বলে ধারণা আরও স্পষ্ট হয়। বুঝতে পারেন, মহিলা কোনওভাবে পথ হারিয়েছেন। তবে সব জটিলতা কেটেছে পুলিশি হস্তক্ষেপে। আর তাই খুশবু কুমারী নামের ওই ভবঘুরে এখন বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়।

সোমবার দুপুরে এমন ঘটনারই সাক্ষী রইল উলুবেড়িয়া। এ দিন বিকেলে স্নান সেরে পুলিশের দেওয়া নতুন কাপড় পরে তিনি যখন ভাত খাচ্ছিলেন, তখন থানার দুঁদে অফিসারের মনও গলে গিয়েছিল। ওই অফিসারের কথায়, ‘‘খাওয়া দেখেই বোঝা যাচ্ছিল মহিলার পেটে অনেকদিন দানাপানি পড়েনি।’’

ভবঘুরে বছর পঁচিশের ওই মহিলাকে গত ১ মে দুপুরে উলুবেড়িয়ার বাণীতবলা থেকে উদ্ধার করেন এলাকার বাসিন্দা তথা উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান। মহিলার হাবভাব দেখে সাইদুরের সন্দেহ হয়। পত্রপাঠ তিনি থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে উদ্ধার করে ওই মহিলাকে।

থানায় নিয়ে যাওয়া হলে মহিলা কনস্টেবলরাই ওই মহিলাকে স্নান করিয়ে দেন। নতুন পোশাকও পরানো হয় তাঁকে। ধীরে ধীরে জানা যায় ওই মহিলার পরিচয়। সাইদুর বলেন, ‘‘কয়েকজন যুবক ভবঘুরে ওই মহিলাকে আমার বাড়িতে আনেন। তিনি কথা বলছিলেন না। তবে ওই যুবকদের কাছে হিন্দি ভাষায় বিস্তারিত বিবরণ তিনি লিখে দিয়েছিলেন।’’

কী লেখা ছিল তাতে? জানা যায় ওই মহিলার নাম খুশবু কুমারী। তাঁর স্বামীর নাম রাকেশ রঞ্জন। বাপের বাড়ি বিহারের জহানাবাদ জেলার কাকো থানার ইমিলিয়া গ্রামে। শ্বশুরবাড়িও জহানাবাদ জেলারই মকদমপুর থানার লাকসানবাগ গ্রামে। সাইদুর বলেন, ‘‘ইন্টারনেট দেখে আমি কাকো থানার সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিছুক্ষণের মধ্যে কাকো থানার পুলিশ আমাকে ওই মহিলার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ জানিয়ে দেয়। মহিলার মায়ের মোবাইল নম্বরও দিয়ে দেয়। সেই সব তথ্যই উলুবেড়িয়া থানায়
জমা দিয়েছি।’’

মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ ওই মহিলার মা এবং মামার সঙ্গে কথা বলে। হোয়াট্সঅ্যাপেই ওই মহিলার ছবি দেখানো হয় তাঁর মা এবং মামাকে। তাঁরা মহিলাকে চেনেন বলে দাবিও করেন।

মহিলার মামা বিভূতিভূষণ ফোনে বলেন, ‘‘আমার ভাগনির উপরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুব অত্যাচার করত। সেই কারণে ভাগনি অনেকদিন নিখোঁজ ছিল। পরে আমরা ভাগনির স্বামী-সহ শ্বশুরবা়ড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে মকদুমপুর থানায় খুনের অভিযোগ করি।’’ যদিও উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

পুলিশ মঙ্গলবার ওই মহিলাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তুললে বিচারক হোমে রাখার নির্দেশ দেন। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মহিলার বাপের বাড়ির লোকজন এলে আদালতের অনুমতি নিয়ে তবেই মেয়েকে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন। ওই মহিলা কথা বলছেন না। তাই তাঁর বাপের বাড়ির পরিজনরা না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত জানা যাবে না।

খুশবু কুমারীর মা স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলে জানান বিভূতিভূষণ। খুশবুও ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণ বলে তিনি জানান। ভাগনির সন্ধান পেয়ে খুশি বিভূতিভূষণ। তিনি বলেন, ‘‘ জহানাবাদ জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উলুবেড়িয়া থানায় যাব খুশবুকে আনতে।’’

Missing Girl
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy