নিখোঁজ মেয়ের ছবি নিয়ে রাস্তায় বাবা-মা। ইনসেটে দিশা।—নিজস্ব চিত্র।
বছর দেড়েকের বোন দিশাকে নিয়ে মণ্ডপে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল সাত বছরের দিদি তনুশ্রী। বেলুন চেয়ে কান্নাকাটি জুড়েছিল দিশা। কিন্তু তার কাছে টাকা কোথায়! তাই বোনকে ভোলাচ্ছিল তনুশ্রী। হঠাৎই তার কাছে হাজির হয় মাঝবয়সী এক মহিলা। দিশাকে আদর করে তার কান্না ভোলাতে বেলুন কিনে আনার জন্য তনুশ্রীকে ১০ টাকা দেয়। প্রথমে নিতে না চাইলেও বোনকে ভোলাতে শেষ পর্যন্ত টাকা নিয়ে বেলুন আনতে চলে যায় সে। কিন্তু বোন কার কাছে থাকবে। ওই মহিলাই বোনকে দেখবে বলে তনুশ্রীকে যেতে বলে।
তবে বেলুন কিনে এনে আর বোনকে দেখতে পায়নি তনুশ্রী। পায়নি মহিলাকেও। এদির ওদিক খুঁজলেও পাওয়া যায়নি দু’জনকে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ নভেম্বর চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনিতে। নিরুপায় বাবা-মা পরদিনই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করলেও এখনও মেয়ের খোঁজ পাননি। পুলিশের উপর ভরসা রাখতে না পেরে নিজেরাই মেয়ের ছবি নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।
পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নিখোঁজ অভিযোগ হয়েছে। শিশুটির পাশাপাশি অপহরণকারী মহিলারও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা নারায়ণ সাঁতরার তিন মেয়ে। বড় মেয়ে সাত বছরের তনুশ্রী এবং দেড় বছরের দুই যমজ মেয়ে দিশা ও বিদিশা। নারায়ণবাবু চটকলে কাজ করতেন। সম্প্রতি মিলে কাজ না থাকায় দিন মজুরি সংসার চালাচ্ছিলেন। জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে ৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার স্ত্রী শুক্লাদেবী ও তিন মেয়েকে নিয়ে চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনিতে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেদিনই বিকেলে দিদি তনুশ্রী বোন দিশাকে নিয়ে স্থানীয় এক পুজো মণ্ডপে আসে। তার পরেই ওই ঘটনা ঘটে বলে তনুশ্রী পুলিশকে জানিয়েছে।
নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘জগদ্বাত্রী পূজোর জন্য স্ত্রী তিন মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিল। গত মঙ্গলবার বিকেলে আমাকে জানায় যে মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। চারিদিকে খোঁজাখুজি করেছি। থানাতেও অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেও মেয়ের খোঁজ পাওয়া গেল না। তাই নিজেরাই মেয়ের ছবি নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy