চলতি বছরে টানা ৫২ দিন তাঁর এজলাস বয়কট করেছিলেন শ্রীরামপুর আদালতের আইনজীবীদের একাংশ। দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে তাঁকে বদলির দাবি তোলা হয়েছিল। শ্রীরামপুর দেওয়ানি আদালতের (সিনিয়র ডিভিশন) সেই বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহাকে শেষ পর্যন্ত বদলির নির্দেশই দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২ মে থেকে বর্ধমান আদালতের ‘লিভ রিজার্ভ অফিসার’ পদে মন্দাক্রান্তাদেবীকে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ, কোনও বিচারক ছুটিতে গেলে তাঁর পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করবেন মন্দাক্রান্তাদেবী— নির্দেশ এমনই।
হাইকোর্টের এই নির্দেশে মন্দাক্রান্তাদেবীর পদমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হল বলে মনে করছেন আইনজীবীদের কেউ কেউ। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবীদের একাংশও। তাঁরাও মনে করছেন— ওই নির্দেশ আসলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অবিচারের শিকার হয়েছেন এই বিচারক।
হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মন্দাক্রান্তাদেবীকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করা হয়েছে বলে যে কথা উঠছে, তা সত্য নয়। প্রতি বছর মার্চে বিচারকদের ‘বাৎসরিক বদলি’ (অ্যানুয়াল ট্রান্সফার) হয়। চলতি বছরে মন্দাক্রান্তাদেবী-সহ ৩০০ জনেরও বেশি বিচারককে বদলি করা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থায় সব পদই গুরুত্বপূর্ণ। যখন কোনও বিচারককে বদলি করা হয়, তখন দেখা হয় সংশ্লিষ্ট বিচারক যে পদমর্যাদায় ছিলেন, তা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে। প্রধান বিচারপতি-সহ পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে গড়া কমিটিই বিচারকদের বদলির সিদ্ধান্ত নেন। অভিজ্ঞ বিচারক না হলে কোনও অবস্থাতেই তাঁকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় না। কেন না, প্রতিদিনের বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে তিনি যদি আগে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত না থাকেন, তা হলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না। তাই নতুন দায়িত্বে মন্দাক্রান্তাদেবীর গুরুত্ব বাড়তে চলেছেই বলেই ওই অফিসের দাবি।