Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
বিধায়কের অভিযোগ, যুক্ত দলের একাংশ

বেচারামের নামে লিফলেট সিঙ্গুরে

লিফলেটটি ছাপা হয়েছে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে নিয়ে। তাতে বেচারামের বিরুদ্ধে ফলাও করে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই সব অভিযোগে ছাপ লেগেছে রাজনীতিরও। 

বেচারাম মান্না। ফাইল ছবি

বেচারাম মান্না। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

একটি ‘লিফলেট’ নিয়ে বেজায় শোরগোল সিঙ্গুরে। অস্বস্তিতে হরিপালের বিধায়ক ও তৃণমূল নেতারা। কে এই লিফলেট ছড়িয়েছে তা জানতে উঠে পড়ে লেগেছে পুলিশ।

লিফলেটটি ছাপা হয়েছে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে নিয়ে। তাতে বেচারামের বিরুদ্ধে ফলাও করে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই সব অভিযোগে ছাপ লেগেছে রাজনীতিরও।

দলেরই একাংশ বলছে, বেচারাম এখন বিজেপি-র দিকে পা বাড়িয়েছেন। তাই-ই এসব রটছে। তবে শুধু বেচারামই নন, তাঁর স্ত্রী করবী মান্নার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। ‘বিচার চাই, বিচার চাই’ এই শিরোনামে ওই লিফলেটে মোট ১১ দফা অভিযোগ জানানো হয়েছে বেচারাম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে।

তবে ছেড়ে কথা বলার পাত্র নয় মান্না পরিবার। তাঁরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিঙ্গুর থানার পুলিশ ওই লিফলেটের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছে।

কারা ছড়িয়েছে ওই লিফলেট?

পুলিশ জানিয়েছে, ‘সিঙ্গুর, হরিপাল পিপলস প্রোটেস্ট’ কমিটি নাম দিয়ে এবং বেচারাম মান্নার ‘লাঞ্ছিত আপ্তসহায়ক’ নাম করে ওই লিফলেটটি বিলি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কী বলছেন বেচারাম মান্না? বিধায়ক বলেন,‘‘এবার-ই প্রথম নয়। এর আগে ২০১১ সালে যখন হরিপালে যখন প্রথম ভোটে দাঁড়াই তখনও এ রকম লিফলেট বিলি করা হয়েছে। তারপর ২০১৬ বিধানসভাতেও একই কাজ করা হয়। এবার আমার নির্বাচন না হলেও লোকসভায়ও ওই লিফলেট দেওয়া হয়। আমাদের দলেরই একাংশ এইসব করছে। আমি পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ বেচারামের আক্ষেপ, ‘‘লিফলেটে আমার স্ত্রী, নাবালক পুত্রকেও ওরা ছাড়েনি। রুচিহীন বিষয়। প্রতিবাদে আইনি পরামর্শও নেব।’’

বস্তুত সিঙ্গুরে দলের দুই গোষ্ঠীর আকচা-আকচি নতুন কোনও ঘটনা নয়। এর আগে সেই বিবাদ মেটাতে রাজ্য কমিটিকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এবার হুগলির ১৬টি বিধানসভার নির্বাচন পরিচালনার ভার স্থানীয় বিধায়কদের দেওয়া হলেও একামাত্র সিঙ্গুরেই দল দায়িত্ব দিয়েছিল বেচারামকে। কিন্তু বিষয়টি ভালভাবে নেননি দলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতারা। গত বছর সিঙ্গুরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়েছিল।। সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তাঁর অনুগামীদের আগের রাতে স্থানীয় একটি লজ ভাড়া করে রেখেছিলেন। পরদিন ভাড়া করা বাসে করে বিডিও অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও ওই লিফলেট প্রসঙ্গে সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’ মুখ খুলতে চাননি।

সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই নীরব থাকলেও মুখ খুলেছেন বেচারামের স্ত্রী করবী মান্না। তিনি এক সময় জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। এখন দলের মহিলা শাখার নেত্রী। তিনি বলেন,‘‘আমি ওই লিফলেট নিয়ে বিদায়ী সাংসদ রত্না দে নাগের সঙ্গে আলোচনা করেছিলান। তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি প্রতিবাদ করতে বলেছিলেন। আমার প্রশ্ন, যাঁরা এসব রটাচ্ছেন তাঁদের এত ভয় কেন? সত্যের মুখোমুখি হন। লিফলেটে পরিচয় গোপন করেছেন কেন? ফোন নম্বর দিন না ওই লিফলেটে। এত ভয়-ই যখন, তখন লিফলেট ছড়ানোর মানে কী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Becharam Manna Leaflet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE