Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ই-রিকশার দাম বেড়েছে, বিপাকে টোটোচালকেরা

সূত্রের খবর, ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের ই-রিকশার এখন দাম হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার। নিয়ম অনুযায়ী, বাতিল টোটোর ‘স্ক্র্যাপ’ হিসাবে ২৫ হাজার টাকা (ব্যাটারি-সহ) ই-রিকশার দাম থেকে বাদ দেওয়ার কথা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০৬:৩৮
Share: Save:

লাইসেন্সপ্রাপ্ত ই-রিকশা প্রায় এক বছর আগে রাস্তায় নেমেছে। তার পরেও হাওড়া থেকে টোটো তুলে দিতে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ উঠছে। এরই মধ্যে ই-রিকশার দাম ও বাতিল টোটোর মূল্য নিয়ে নানা অভিযোগ করছেন মানুষ। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন ই-রিকশা কিনতে যাওয়া নথিভুক্ত টোটোচালকেরা।

সূত্রের খবর, ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের ই-রিকশার এখন দাম হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার। নিয়ম অনুযায়ী, বাতিল টোটোর ‘স্ক্র্যাপ’ হিসাবে ২৫ হাজার টাকা (ব্যাটারি-সহ) ই-রিকশার দাম থেকে বাদ দেওয়ার কথা। অভিযোগ, ই-রিকশার মূল্য ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায়, স্ক্র্যাপের ওই টাকা আর ডিলারদের পকেট থেকে দিতে হচ্ছে না! জেলাশাসকের কাছে টোটোমালিকেরা এই অভিযোগ লিখিত ভাবেও জানিয়েছেন।

হাওড়ায় ই-রিকশা চালু করা নিয়ে নানা টালবাহানার পরে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর পুর এলাকার ৫২১০টি টোটোকে ই-রিকশায় বদলের নির্দেশ দেয়। স্থির হয়েছিল, যাঁদের ‘টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ আছে, কেবল তাঁরাই ই-রিকশা কেনার ছাড় পাবেন। প্রথমে ওই সংখ্যক ই-রিকশা বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয় কিছু ডিলারকে। কয়েক মাস পরে দেখা যায়, ডিলারদের অনেকেই এ নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। তখনই ডিলারশিপের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। সেই সুযোগে শহরের যত্রতত্র ই-রিকশা বিক্রির দোকান গজিয়ে ওঠে।

সরকারি নিয়ম অনুয়ায়ী, নিজের টোটো ‘স্ক্র্যাপ’ বা বাতিল করার পরে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের শংসাপত্র ডিলারকে দেখালেই ই-রিকশা কিনতে পারবেন সংশ্লিষ্ট চালক। বাতিল টোটোর জন্য ১৫ হাজার এবং ব্যাটারির দাম আরও ১০ হাজার নিয়ে মোট ২৫ হাজার টাকা ই-রিকশার মূল দাম থেকে বাদ যাওয়ার কথা। ডিলারদের বিরুদ্ধে টোটোমালিকদের মূলত দু’টি অভিযোগ। প্রথমত, কয়েক জন ডিলার তাঁদের জানাচ্ছেন, বাতিল টোটোর টাকা দেবে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। অথচ সেই দাম দেওয়ার কথা ডিলারেরই। দ্বিতীয়ত, বাতিল টোটোর দাম যাতে ডিলারের পকেট থেকে না যায়, সে জন্য ই-রিকশার দাম বাড়ানো হচ্ছে।

আরও অভিযোগ, যে দামে ই-রিকশা বিক্রি হচ্ছে, তার বিল হচ্ছে না। যেমন, কেউ যদি ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকায় কেনেন তাঁকে বিল দেওয়া হচ্ছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার। এমনটা কেন? বলা হচ্ছে, বাতিল টোটোর দাম ও আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকে নম্বর প্লেট পেতে যে খরচ হচ্ছে তা লেখা যাবে না।

নন্দকিশোর সাউ নামে এক টোটোমালিক বলেন, ‘‘আগে যে ই-রিকশা ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, এখন তার দাম ১ লক্ষ ৮৫ হাজারের উপরে। জানতে চাইলেই ডিলারেরা বলছেন আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে খরচ আছে। তাই দাম বেড়েছে।’’ লালন সাউ নামে এক ই-রিকশা মালিকের অভিযোগ, ‘‘ই-রিকশার নামে লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতি হচ্ছে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর শুধু টোটো বাতিল করার প্রক্রিয়া পর্যন্ত থাকছে। তার পরে বাজারে কী হচ্ছে, তার নজরদারি করছে না।’’

হাওড়া আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাতিল টোটোর দাম না দিতে চাওয়া এবং পুরো কেনা দামের বিল না দেওয়ার অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। খোঁজ খবর নিচ্ছি। প্রমাণিত হলে ডিলারশিপ বাতিল পর্যন্ত করা হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

E-Rickshaw Toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE