উদ্ধার: মিলেছে বোমা তৈরির এমনই নানা উপকরণ। নিজস্ব চিত্র
ভোটের মুখে বাজি কারখানাগুলি পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, বেআইনি বাজি কারখানাগুলি নিয়ে। তাই হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে বোমা, বোমা তৈরির মশলাও।
পুলিশ সূত্রে খবর, সারা বছর যেখানে বাজি তৈরি হয়, সেখানে ভোটের আগে আনাগোনা শুরু হয় দুষ্কৃতীদের। বাজির মশলা বদলে যায়, রূপ নেয় বোমা। শুরু হয় তাণ্ডব। তাই আগে থেকেই সতর্ক প্রশাসন।
কলকাতা লাগোয়া হুগলি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় বাজি তৈরির বেশ কিছু বড় কারখানা রয়েছে। তার বেশির ভাগই বেআইনি বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তাই সারা বছর বাজি তৈরি হয় চোরাগোপ্তা। উৎসবে-পার্বণে ওইসব বাজি কলকাতায় সরবরাহ করে হুগলি।
ভোটের আগে ওই বাজি কারখানাগুলিকেই কাজে লাগাতে পারে দুষ্কৃতীরা এমনই আশঙ্কা গোয়েন্দাদের। বেআইনি বাজি কারবারিদের বেশি টাকার টোপ দিয়ে বোমা বানানোর কাজে লাগানোর নজির এর আগেও মিলেছে। গরিব কারিগরেরাও সেই ফাঁদে পা দেন। অভিযোগ, কখনও বা প্রলোভনের বদলে কাজ করে হুমকি। রাজনৈতিক দলগুলির ছাতার তলায় থাকা দুষ্কৃতীরা তাই ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযান চালিয়ে তিনটি এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার করেছে। পুড়শুড়া, আরামবাগ ছাড়াও চণ্ডীতলার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে। চণ্ডীতলার বেগমপুর থেকে পুলিশ ১৪০ কিলোগ্রাম বোমার মশলা উদ্ধার করেছে। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘পুলিশ হুগলির তিনটি থানা এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার করেছে।’’ হুগলির গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি চন্দননগর কমিশনারেট এলাকাতেও খুব শীঘ্রই পুলিশ তল্লাশি শুরু করবে। কারণ ডানকুনির বহু এলাকায় বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে বলে খবর। চন্দননগরের কমিশনার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সব ব্যবস্থাই নিচ্ছে।’’
পুলিশির আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও। এর আগে ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা থানা এলাকায় বেআইনি বাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে প্রাণহানিও। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলে ওই সব বাজি কারখানা। অনুমতি তো দূর, ন্যূনতম নিরাপত্তার কথাও ভাবা হয় না ওই সব কারখানায়। মজুরি কমাতে ওই সব কারখানার কাজে লাগানো হয় অপটু মহিলাদের। বাজি তৈরির কাজে যুক্ত করা হয় শিশুদেরও।
রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই বাজি কারখানা গড়ে ওঠে একেবারে বসতি এলাকায়। কোনও এলাকায় বাসিন্দারা নিজেদের ঘরের ভিতরে বা বারান্দায়, উঠোনে বাজি তৈরি করেন। যে কোনও রকম দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে বেশি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ শুধু ভোটের মুখে অভিযান চালাচ্ছে। অথচ, সারা বছর প্রাণ হাতে করেই বাস করতে হয় তাঁদের।
জেলা পুলিশের কর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, তল্লাশি নিয়মিত চলছে। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় তারা তৈরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy