ছবি: পিটিআই।
ঘড়িতে তখন সাড়ে বারোটা। মিনিট কুড়ির মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার হাজির হয়ে যাবে আরামবাগের পারুল মাঠের জনসভায়। অথচ তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনে আরামবাগের ওই সভাস্থল তখনও প্রায় ফাঁকা। দুপুর ২টোয় খানাকুল মাঠের সভারও ছবিটা প্রায় একই।
দু’জায়গাতেই দলের আশানুরূপ জমায়েত হয়নি। কর্মীদের দাবি একে দুপুর, তার উপর রোদ এবং গরমের জেরেই ভিড় উপচে পড়েনি। আরামবাগে সভামঞ্চ থেকে দলের জেলা এবং মহকুমা স্তরের নেতারা মাইকে আসন ভরানোর জন্য বেদম হাঁকডাক করতে দেখা গেল। মাঠ কিছুটা ভরলেও পিছনের ফাঁকা অংশটা ভরালেন সিভিক ভলান্টিয়ারই।
আরামবাগে মমতার হেলিকপ্টার নামল ঠিক ১টা নাগাদ। মিনিট সাতেকের মধ্যে মঞ্চে উঠে বললেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সব নির্বাচনই রোদে করতে হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন মার্চের মধ্যে করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বিরোধী দল মে মাসে নিয়ে গেল।” বিজেপির সুবিধা করে দিতেই এবার ৭ দফা ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরই উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আরামবাগে ১০০ আসনের মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। সঙ্গে ৩৫৭ কোটি টাকা দিয়ে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হচ্ছে। এর আগে আরামবাগ এবং শ্রীরামপুরে মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল করে দিয়েছি। হুগলি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ও পাচ্ছে। আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানটা হয়ে গেলে খানাকুল-সহ আরামবাগ মহকুমার বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’’
এখানেই শেষ নয়। জেলায় রাস্তা তৈরি নিয়ে লম্বা তালিকা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘হুগলির প্রতিটি ব্লকের এলাকার উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কোথাও বাদ দিইনি।”
দলীয় কর্মীদের বার্তা দিতেও ভোলেননি মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘মানষের সাথে থাকতে হলে মানুষকে ভালবাসতে হবে। যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়, সংশোধন করে নিতে হবে।” তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সিপিএমের সেই হার্মাদগুলো এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে। সিপিএমের সব কটাকে জেলে ভরা উচিত ছিল। আমরা বলেছিলাম, বদলা চাইনি। তাই কারও বিরুদ্ধে কিছু করিনি। এখন দেখুন ওগুলো বিজেপিতে ঢুকেছে।’’
বিজেপি নেতাদের ‘বসন্তের কোকিল’ বলে তিনি সতর্ক করে বলেন, “পাঁচ বছর আগে বলেছে আমি চা-ওলা। এখন বলছে আমি চৌকিদার। ওরা নোট বাতিল করেছে, এ বার নরেন্দ্র মোদীকেই বাতিল করে দিন।’’
খানাকুলে বক্তব্যের আগে মুখ্যমন্ত্রীর স্মৃতিচারণ, ‘‘এখানে অনেক আগে (২০০০ সালের ১ সেপ্টেম্বর) একবার সুব্রতদাকে (মুখোপাধ্যায়) নিয়ে এসেছিলাম। এখন আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে। সে দিন বৃষ্টিতে আমরা ভিজেছিলাম। আমি সুব্রতদাকে দোকান থেকে পাজামা-পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলাম। সুব্রতদা সেটা পরেই বাড়ি ফিরেছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy