Advertisement
২৫ মে ২০২৪

শুধুই প্রতিশ্রুতি, সেতু আজও কাঠের

নিয়ম মেনে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষিত হয়। ঘোষণা করা হয় প্রার্থীদের নামও। তালিকায় নাম উঠলেই রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রার্থীরা বেরিয়ে পড়েন ভোট ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে। ওই সময় তাঁদের জোড়া হাত যেন খুলতেই চায় না। নির্বাচন পর্ব চুকে গেলেই, তাঁরা যেন অন্য গ্রহের মানুষ হয়ে যান। ভুলে যান সব প্রতিশ্রুতি। উপেক্ষিত থেকে যায় এলাকাবাসীর নানা সমস্যা।

ভগ্নদশায় মাজু সেতু।

ভগ্নদশায় মাজু সেতু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৩:৪৩
Share: Save:

নিয়ম মেনে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষিত হয়। ঘোষণা করা হয় প্রার্থীদের নামও। তালিকায় নাম উঠলেই রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রার্থীরা বেরিয়ে পড়েন ভোট ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে। ওই সময় তাঁদের জোড়া হাত যেন খুলতেই চায় না। নির্বাচন পর্ব চুকে গেলেই, তাঁরা যেন অন্য গ্রহের মানুষ হয়ে যান। ভুলে যান সব প্রতিশ্রুতি। উপেক্ষিত থেকে যায় এলাকাবাসীর নানা সমস্যা।

যেমন ভাবে কয়েক দশক পরেও উপেক্ষিত রয়েছে করাইলের কন্যামণি এলাকায় বরজোড়া খালের উপর কাঠের সেতুটি। একই অবস্থা উলুবেড়িয়া উত্তরের মাজুক্ষেত্র খালের পোল ও আমতার ঝিখিরার সেতুরও। স্থানীয়দের ক্ষোভ, ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি তো মেলেই। তা ছাড়া প্রশাসন বারবার সেতুগুলি সংস্কারের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয় না।

সাঁকরাইলের কন্যামণি গ্রামের এই কাঠের সেতুটি কয়েক দশকের পুরনো। গ্রামবাসী এটি পাকা করার দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। সেতুটির অবস্থা বেহাল। কোথাও সেতুর অংশ নষ্ট হয়ে গেলে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের তরফে তাপ্পি মেরে মেরামত করে দেওয়া হয়। পুরোপুরি সংস্কার করা হয় না। সেতুটির গোড়া এতটই দুর্বল যে, জোয়ারের সময় সেতুটি নড়বড় করে। ফলে তখন সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পান এলাকার বাসিন্দারা।

ওই সেতুর পাশেই রয়েছে কন্যামণি আপার প্রাইমারি স্কুল, কন্যামণি প্রাইমারি স্কুল, কন্যামণি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ওই সেতুটিই কন্যামণি ও সারেঙ্গা গ্রামের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করছে। এ ছাড়াও কন্যামণি গ্রামের লোকেদের হাট বাজার ও নলপুর স্টেশনেও যাতায়াত করতে এই পথ ব্যবহার করে থাকেন। সেচ দফতরের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি বরজোড়া খালটি সংস্কার করা হয়েছে। সেই সময়ও সেতুটির সংস্কার করা হয়েছে। তবে পাকা করার কোনও পরিকল্পনা এখন নেই।

গ্রামীণ এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূণ সেতু ঝিখিরার দামোদর নদের উপর সেতুটি। এটিও ৩০ বছর আগে তৈরি হয়েছিল বলে পূর্ত সড়ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু এক দশক ধরে সেতুটির অবস্থা বেহাল। সম্প্রতি সেতুটির মাঝের একটি পিলার ভেঙে যাওয়ায় বাস-সহ ভারি যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। সম্প্রতি পূর্ত দফতর (সড়ক) সেটি মেরামত করে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেয়। সমস্যা আপাতত মিটলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওখানে একটি নতুন সেতু করা হোক। পূর্ত দফতরের (সড়ক) এক কর্তা বলেন, ‘‘নতুন একটি সেতু ওখানে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। নকশা তৈরির কাজ চলছে।’’ প্রসঙ্গত সেতুটির উপর দিয়ে হাওড়া-ঝিখিরা, মুচিঘাটা-করুণাময়ী রুটের বাস-সহ বিভিন্ন রুটের অটো, ছোট গাড়ি চলে। জয়পুর, ঝিখিরা-সহ হুগলির খানাকুলের বহু লোক যাতায়াত করেন ওই পথ দিয়ে।

একই অবস্থা উলুবেড়িয়া উত্তরের মাজুক্ষেত্র সেতুটির। লোহার পিলারের বেশ কয়েকটি ভেঙে গিয়েছে। রেলিং নেই বললেই চলে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনও দিন বড় বিপদের মুখে পড়বেন তাঁরা। সেতুটি জগৎবল্লভপুরের ইসলামপুর পঞ্চায়েতের মাজুক্ষেত্রের সঙ্গে আমতা ১ ব্লকের ভান্ডারগাছা পঞ্চায়েত এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে সেতুটির সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের ক্ষোভ, আশ্বাস শুনতে শুনতে কান ভারি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পূরণ হবে কবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

concrete construction maju bridge uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE