নিহত: শেখ আলাউদ্দিন।
ফের শিরোনামে রিষড়া। ফের মাথায় গুলি করে খুন।
পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় সম্প্রতি ঘুমন্ত এক তরুণীকে মাথায় গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তাঁরই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের টিঁকি এখনও ছুঁতে পারেনি পুলিশ। দেড় মাসের ব্যবধানে মঙ্গলবার ফের গুলি চলল রিষড়া শহরে। একেবারে দিনের আলোয় ঘিঞ্জি এলাকায় সকলের সামনে খুন হলেন শেখ আলাউদ্দিন। আগের ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরতে না পারা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার। এ দিনের ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে পুলিশ-প্রশাসনকে দুষলেন বাসিন্দারা। তার উপর একজন সাংসদের বাড়ির সামনে এমন ঘটনায় বিষয়টি আরও গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে।
চলতি বছরে ইতিমধ্যেই হুগলিতে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ বার বার প্রশ্ন তুললেও তা যে প্রশাসনের কানে পৌঁছচ্ছে না, পর পর ঘটনাতেই তার প্রমাণ। গত তিন মাসে হুগলিতে অন্তত ৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে ভরা বাজারে দাপিয়ে বেড়িয়েছে দুষ্কৃতীরা। এ বার মহকুমা সদর শ্রীরামপুরের পাশের শহর রিষড়ায় দেখা গেল দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য। স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ জেলায় আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, জেলায় আগ্নেয়াস্ত্রের যে ভাবে আমদানি বেড়েছে তাতে দুষ্কৃতীদের বাগে আনতে হলে অবিলম্বে পুলিশের সে সব উদ্ধার করা উচিত।
জেলার পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন অবশ্য মনে করেন, দুষ্কৃতী দমনে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয়। তাঁর কথায়, ‘‘চুঁচুড়ায় দু’-একটা ঘটনা ঘটেছে এটা সত্যি। তবে ধরপাকড়ও হয়েছে। রবীন্দ্রনগরের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত কয়েক মাসে শ্রীরামপুর শিল্পাঞ্চলে কোনও খুন হয়নি। রিষড়ার ক্ষেত্রেও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
শোকার্ত: নিহতের স্ত্রীকে সান্ত্বনা পড়শিদের। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ সুপার যাই দাবি করুন, এ দিনের ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা যে বেশ চিন্তিত তা বহু বাসিন্দাই জানিয়েছেন। রিষড়ার ঘটনাকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। জেলা বিজেপি সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, যখন যা খুশি করছে। জেলায় বেআইনি অস্ত্রের ভাণ্ডার তৈরি হচ্ছে। শাসক দল এবং পুলিশের একাংশের মদত না থাকলে এত সাহস দুষ্কৃতীরা পাচ্ছে কোথা থেকে?
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘সমাজবিরোধীরা বুঝে গিয়েছে, এটা ওদের মুক্তাঞ্চল। তা ছাড়া পুলিশও কিছু করবে না। কেন না, ওরা শাসক দলের কোনও না কোনও গোষ্ঠীতে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy