Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন করে আত্মসমর্পণ

পুলিশকে ছোটু জানিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে অন্য যুবকের সম্পর্ক ছিল। শুধু তাই নয়, স্ত্রী অকারণে তাকে মারধরও করত। সেই রাগেই বুধবার রাতে ঘুমের মধ্যেই কাপড় এবং বিদ্যুতের তার গলায় পেঁচিয়ে সানাকে সে মেরে ফে‌লে। তাদের ছেলে তখন ঘুমোচ্ছে। এরপর পা ভাঁজ করে দড়ি দিয়ে বেঁধে স্ত্রীর দেহ পিচবোর্ডের বাক্সে ভরে ফেলে ছোটু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ১৭:০০
Share: Save:

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন করে দেহ পিচবোর্ডের বাক্সে ভরে জঙ্গলে ফেলে এসে থানায় আত্মসমর্পণ

করল স্বামী।

বৃহস্পতিবার তখন সবে ভোরের আলো ফুটেছে। শ্রীরামপুর থানার ডিউসি অফিসার নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ানো ডোরাকাটা হাফ প্যান্ট আর নস্যি রঙের গোলগলা গেঞ্জি পরা ওই যুবকের মুখে তাঁর অপরাধের কথা শুনে ওই পুলিশকর্মীর চোখ কপালে! যুবককে নিয়ে পুলিশের গাড়ি ছুটল গঙ্গার ধারে শহরের জলকল লাগোয়া জঙ্গ‌লে। উদ্ধার হল শ্রীরামপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পার্সি লেনের বাসিন্দা সানা খাতুন (২৩) নামে ওই মহিলার বাক্সবন্দি দেহ। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ ছোটু নামে ওই যুবককে।

কিন্তু কেন খুন?

পুলিশকে ছোটু জানিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে অন্য যুবকের সম্পর্ক ছিল। শুধু তাই নয়, স্ত্রী অকারণে তাকে মারধরও করত। সেই রাগেই বুধবার রাতে ঘুমের মধ্যেই কাপড় এবং বিদ্যুতের তার গলায় পেঁচিয়ে সানাকে সে মেরে ফে‌লে। তাদের ছেলে তখন ঘুমোচ্ছে। এরপর পা ভাঁজ করে দড়ি দিয়ে বেঁধে স্ত্রীর দেহ পিচবোর্ডের বাক্সে ভরে ফেলে ছোটু। দড়ি দিয়ে বাক্সের মুখ বেঁধে মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে গঙ্গার ধারের ওই জঙ্গলে ফেলে দেয়। পক্ষান্তরে, নিহতের মামা মহম্মদ নিজাম খান অবশ্য শ্রীরামপুর থানায় ছোটু এবং তার বাবা মহম্মদ নিজামুদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সানার বিয়ের সময় দেড় লক্ষ টাকা নগদ দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পরে আরও পণের জন্য সানাকে চাপ দেওয়া হতো। পণের দাবিতেই তাঁকে মেরে ফেলা হয়।


জঙ্গলে এই বাক্সেই রাখা হয়েছিল সানার দেহ।

পুলিশকর্তারা জানান, ছোটু নিজের অপরাধের কথা কবুল করেছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সানার বাপের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায়। বছর তিনেক আগে তাঁর সঙ্গে শ্রীরামপুরের জুতো কারবারি ছোটুর বিয়ে হয়। দম্পতির এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ধৃতকে এ দিনই শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। ধৃতকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ছোটু কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘‘স্ত্রী আমাকে মারত বলেই রাগে খুন করেছি। ওর সঙ্গে একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। পণের অভিযোগ সত্যি নয়।’’ ছোটুর বাবা বলেন, ‘‘ছেলে দোষ করেছে। ওর যা সাজা হওয়ার হোক।’’

নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wife Pregnant killing Surrender
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE