Advertisement
E-Paper

বন্ধ হচ্ছে প্রতিষ্ঠান, বেড়ে চলেছে সঙ্কট

উত্তরপাড়ার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আক্রান্তে সংখ্যা অন্তত ৮৮ বলে পুরসভা সূত্রের খবর। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:০১
চলছে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। রবিবার গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয়ে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

চলছে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। রবিবার গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয়ে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

কী শহর, কী গ্রাম— রেহাই মিলছে না কোথাও।

হুগলি জুড়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে (প্রশাসনিক কার্যালয়, পুরসভা, পঞ্চায়েত, ডাকঘর, পঞ্চায়েত সমিতি ইত্যাদি) করোনা হানা দিচ্ছে। সরকারি কর্মী-আধিকারিকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে শুধু প্রশাসনের অন্দরেই চিন্তার ভাঁজ পড়েনি, ত্রাহি রব সাধারণ মানুষেরও। প্রয়োজনে যাবেন কোথায় তাঁরা? ইতিমধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে গিয়েছে। কম কর্মীতে কাজ করতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন অনেক প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকেরা।

উত্তরপাড়ার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আক্রান্তে সংখ্যা অন্তত ৮৮ বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তাঁদের মধ্যে দুই বিদায়ী কাউন্সিলর এবং পুরসভার চার আধিকারিকও রয়েছেন। পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব এবং অন্য পুরকর্তারা নিভৃতবাসে থেকে পুরসভার কাজকর্ম সামলাচ্ছেন। পুরসভা বন্ধ না-হলেও পরিস্থিতির জেরে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগও উঠছে।

দিলীপ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘নিভৃতবাসে থাকলেও সকলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। পুরসভার অন্যেরাও বিশেষ শারীরিক সমস্যা না-হলে এ ভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা নিয়ন্ত্রণে চন্দননগরের মতোই ব্যবস্থা (ওয়ার্ড ধরে জীবাণুনাশক স্প্রে, বাজারে ভিড় কমাতে ব্যবস্থা, মাস্ক পরায় জোর, লালারসের নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানো ইত্যাদি) নেওয়া হবে উত্তরপাড়ায়।

কর্মীর করোনা হওয়ায় শ্রীরামপুর এবং আরামবাগ পুরসভা ইতিমধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ শ্রীরামপুর আদালতও। শ্রীরামপুর পুরসভার এক বর্ষীয়ান বিদায়ী কাউন্সিলরের ইতিমধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে। করোনা হানা দিয়েছে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের দফতরেও। চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ওই দফতরের এক কর্মীর দেহেও সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ ৫ জনের করোনা ধরা পড়ে। তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে পাঠানো হয়। এর জেরে আজ, সোমবার থেকে সাত দিন পঞ্চায়েত সমিতি কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, শুধু প্রশাসনিক জরুরি কিছু কাজকর্ম চলবে।

জাঙ্গিপাড়ার মুণ্ডলিকা পঞ্চায়েতে নতুন করে ১০ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে পঞ্চায়েত। এক সদস্যের করোনা হওয়ায় দিন কয়েক বন্ধ রাখা হয়েছিল শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর পঞ্চায়েত। কানাইপুর এবং শ্রীরামপুরের মাহেশ ডাকঘরও একই কারণে বন্ধ। সংক্রমণের ভয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে হরিপালের জেজুড় পঞ্চায়েতও।

জেলার অন্য পঞ্চায়েতগুলিতে কাজ চলছে গেটে তালা দিয়ে।

কেউ এলে প্রয়োজন জেনে তালা খোলা হচ্ছে। হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে তবে ঢোকানো হচ্ছে। স্বভাবতই পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে

পরিষেবায়। মুণ্ডলিকার এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘কী যাঁতাকলে পড়েছি! একদিকে পঞ্চায়েত বন্ধ। একই কারণে প্রধান-উপপ্রধানের বাড়িতেও যাওয়া যাচ্ছে না।’’

জেজুড় পঞ্চায়েতের প্রধান মইদুল আলি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কয়েক জন জনপ্রতিনিধি এবং কর্মীর লালারস পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই আপাতত পঞ্চায়েত ভবন বন্ধ রাখা হয়েছে। কী করব বলতে পারেন?’’

Uttarpara Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy