ভস্মীভূত: তখনও আগুন জ্বলছে কারখানায়। —নিজস্ব চিত্র।
কারখানা রয়েছে শ’খানেক। কিন্তু সেখানে অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। পুজোর মুখে শুক্রবার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ির শিল্পতালুকে আগুনে একটি স্পঞ্জ কারখানার ভস্মীভূত হওয়ার পরে সেই প্রশ্ন ফের বড় ভাবে সামনে এল। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলের ১০টি ইঞ্জিন আগুন আয়ত্তে আনে। তবে, কেউ হতাহত হননি।
এই নিয়ে গত এক বছরে বেসরকারি ওই শিল্পতালুকে চার বার আগুন লাগল। মাসদুয়েক আগে শেষবার শিল্পতালুকের একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লেগেছিল। আগের ঘটনাগুলি থেকে ওই শিল্পতালুকের কর্তারা বা কারখানা-মালিকেরা কতটা সচেতন হয়েছেন, উঠছে সেই প্রশ্নও। ওই শিল্পতালুকের কার্যকরী সভাপতি বিকাশ মধুকরিয়ার দাবি, ‘‘অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা দেখভালের দায়িত্ব প্রশাসনের। আমরা বারবার বৈঠকে কারখানা-মালিকদের অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ঠিক রাখা, নিকাশি নালা পরিষ্কার-সহ কারখানার পরিকাঠামো যথাযথ রাখার কথা বলি। কিন্তু কারখানা-মালিকেরা শোনেন না।’’
অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ওই স্পঞ্জ কারখানার কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দমকলের হাওড়া বিভাগের আধিকারিক প্রশান্ত ভৌমিক জানান, কর্মিসংখ্যা কম থাকায় নিয়মিত নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। তবে এই কারখানায় যথেষ্ট পরিমাণ অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র না-থাকায় আগুন দ্রুত ছড়ায়। পুলিশ ও দমকলের অনুমান, শট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন লাগে বেলা ১১টা নাগাদ। তখন ২২ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে তাঁরাই প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকায় তাঁরা কারখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। কারখানায় দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। কারখানার শেড ভেঙে পড়ে। প্রথমে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। পরে আসে আরও পাঁচটি। কারখানার কাছাকাছি কোনও পুকুর বা জলাশয় না-থাকায় আগুন মোকাবিলায় দমকল প্রথমে কিছুটা সমস্যায় পড়ে। এর মধ্যে অবশ্য কিছুক্ষণ মুষল ধারায় বৃষ্টি হওয়ায় দমকলের কাজ কিছুটা সহজ হয়। রাত পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা জানান, ওই কারখানার শ্রমিকদের সকলে আগুন নেভানোর কৌশল জানেন না। ফলে, প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হয়। দমকলের তরফে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ তাঁদের দেওয়া হতো কিনা, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু পুজোর মুখে এমন দুর্ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে ওই কারখানার শ’খানেক শ্রমিকের। কবে থেকে ফের পুরোদমে কাজ চালু হবে, সেই দিন গোনা শুরু করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy