Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জোর করে বিয়ে দিচ্ছে পিসি, আমাকে বাঁচান, ফোন করে আর্তি পঞ্চদশীর

বৈঠকের মাঝেই ফোন এসেছিল চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামলের মোবাইলে। ফোনের অন্য প্রান্তে কিশোরীর গলা। মেয়েটির আর্তি, ‘‘আমাকে বাঁচান। পিসি জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share: Save:

বৈঠকের মাঝেই ফোন এসেছিল চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামলের মোবাইলে। ফোনের অন্য প্রান্তে কিশোরীর গলা। মেয়েটির আর্তি, ‘‘আমাকে বাঁচান। পিসি জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আমি বিয়ে করতে চাই না। পড়তে চাই।’’

মেয়েটির আর্তি শুনে খোঁজখবর নিয়ে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা জানতে পারেন, তার কথা একেবারে সত্যি। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে জানান। এরপর শুক্রবার বিকেলে প্রশাসনের তরফে বাড়িতে গিয়ে মেয়েটির বিয়ে বন্ধ করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, পনেরো বছরের ওই কিশোরীর বাড়ি পান্ডুয়ায়। সে স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া। সম্প্রতি তার বিয়ে ঠিক হয়। কয়েক দিন তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আজ, রবিবার বিয়ের কথা ছিল।

মেয়েটির বক্তব্য, এই বয়সে সে বিয়ে করতে চায় না। কিন্তু পিসি সে কথা কানে তোলেননি। মেয়ের বিয়ে দিতে মা-বাবাও রাজি নন। তবে পিসির উপর তাঁরা কথা বলতে পারেননি। মেয়েটি হার মানতে চায়নি! মরিয়া হয়ে ওই কিশোরী চাই‌ল্ড লাইনের ওই আধিকারিকের নম্বর জোগাড় করে ফেলে। শুক্রবার বিকেলে পান্ডুয়ার জয়েন্ট বিডিও সুব্রত সরকার, পুলিশ আধিকারিক এবং চাইল্ড লাইনের লোকজন মেয়েটির বাড়িতে যান। সাবালিকা না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না বলে অভিভাবকরাও প্রতিশ্রুতি দেন। শনিবার মেয়েটি স্কুলে গিয়েছিল।

পান্ডুয়ার অন্য একটি গ্রামে সতেরো বছরের একটি মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন অভিভাবকরা। সোমবার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। মেয়েটি স্থানীয় একটি গার্লস স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সেও বিয়ে করতে চায়নি। বাড়ির লোকেরা অবশ্য তার কথায় কর্ণপাত করেননি। মেয়েটি সহপাঠীদের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। সহপাঠীরাই চাইল্ড লাইনে ফোন করে।

শুক্রবার জয়েন্ট বিডিও সুব্রতবাবু, থানা এবং চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা মেয়েটির বাড়িতে যান। আঠেরো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। অভিভাবকদের আইনি বিধিনিষেধের কথা জানানো হয়। এর পরেই অভিভাবকরা পিছু হটেন। সাবালিকা না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আর করা হবে না বলে মেয়েটির বাবা মুচলেকা দেন।

প্রশাসন সূত্রের দাবি, সত্যিই সত্যিই তাঁরা প্রতিশ্রুতি রাখছেন কি না, সে দিকে নজর রাখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor Marriage Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE