Advertisement
E-Paper

গণপ্রহারে মৃত্যু দুষ্কৃতীর, রেহাই পেলেন না মা-ও

খুন, ছিনতাই, শ্লীলতাহানির একাধিক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। বহুবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও তার দৌরাত্ম্য কমেনি, বরং বাড়ছিল। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় মানুষজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৮
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গোপাল এবং তার মা আশাদেবীর দেহ। রবিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গোপাল এবং তার মা আশাদেবীর দেহ। রবিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

খুন, ছিনতাই, শ্লীলতাহানির একাধিক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। বহুবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও তার দৌরাত্ম্য কমেনি, বরং বাড়ছিল। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় মানুষজন।

গত ৮ অক্টোবর, সপ্তমীর দিন ছাড়া পেয়ে এলাকায় ফিরেছিল সে। তারপর গত ২১ অক্টোবর ফের খুনের হুমকি দিয়ে এক যুবতীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। যুবতীর চিৎকারে লোকজন জড়ো হলে সে পালিয়ে যায়। শনিবার রাতে চুঁচুড়ার লেনিননগর এলাকায় তার বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে চড়াও হয় একদল মানুষ। গোপাল মজুমদার (৩৫) নামে ওই দুষ্কৃতীকে প্রচণ্ড মারধর শুরু করে তারা। ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন মা আশাদেবী (৫৭)। কিন্তু ছেলের কুকর্মে তাঁরও সায় আছে এই অভিযোগে তাঁকেও রেহাই দেয়নি জনতা। মারের চোটে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। গোপালের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েও রয়েছে।

হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘মৃত যুবকের বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, শ্লীলতাহানি-সহ নানা অভিযোগ ছিল। ওই ঘটনায় খুনের মামলা শুরু হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, লেনিননগরের বাসিন্দা গোপাল ওরফে বুড়ো দীর্ঘদিন ধরেই সমাজবিরোধী কাজকর্মে জড়িত। চুঁচুড়া-সহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুন, ছিনতাই এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালের ৪ মে চুঁচুড়া স্টেশন সংলগ্ন ময়নাডাঙা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫০ হাজার টাকা তোলা চেয়ে না পাওয়ায় তাঁকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ চুঁচুড়ার নারকেলবাগান এলাকায় এক বৃদ্ধার গলার হার ছিনতাই করে তাঁকে খুন করার অভিযোগও ছিল গোপালের বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার গভীর রাতে বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে গোপাল শুয়ে পড়ে। একটা ঘরে গোপাল একাই শুয়েছিল। মাঝরাতে স্থানীয় কিছু লোক তাকে বাইরে ডেকে বাঁশ ও কংক্রিটের চাঙড় দিয়ে মারতে থাকে। আওয়াজ পেয়ে গোপালের মা বাইরে বেরিয়ে এলে তাঁকেও মারতে শুরু করে জনতা। মারধর করে দু’জনকেই রাস্তার ধারে নর্দমায় ফেলে চলে যায় তারা। রবিবার সকালে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়।

কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এলাকার মানুষ। তবে সকলেই যে গোপালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন তা শোনা গিয়েছে অনেকের মুখেই। তাঁদের অভিযোগ, ছেলে কুকর্ম করলেও বাধা দিতেন না মা। সেই কারণে তাঁর উপরেও অনেকের ক্ষোভ ছিল।

গোপালের স্ত্রী রাখী মজুমদার বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই স্বামী অত্যাচার করত। কোথায় কী ঘটিয়ে আসত আমাকে কিছু বলত না। প্রতিবাদ করলে মারধর করত। এলাকার লোকজনও ওর উপরে খেপে ছিল। তবে কারা ওকে মারল জানি না।’’

Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy