Advertisement
E-Paper

বধূর দেহাংশ ধুতেই লেগেছিল এক ট্যাঙ্ক জল

বালির গঙ্গার ঘাটে সোনি রজকের কাটা মাথা ও দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী উপেন্দ্র রজক ও তার দুই সঙ্গী, দিলবর খান ও সেকলিন শামিমকে পুলিশি হেফাজতে জেরা করে এমনই তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৭
স্বামী উপেন্দ্রের সঙ্গে সোনি রজক।

স্বামী উপেন্দ্রের সঙ্গে সোনি রজক।

খণ্ড খণ্ড করে কাটা দেহাংশের রক্ত ধুতেই খালি হয়ে গিয়েছিল আবাসনের গোটা ট্যাঙ্ক!

বালির গঙ্গার ঘাটে সোনি রজকের কাটা মাথা ও দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী উপেন্দ্র রজক ও তার দুই সঙ্গী, দিলবর খান ও সেকলিন শামিমকে পুলিশি হেফাজতে জেরা করে এমনই তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ধৃতেরা জানিয়েছে, ওই তরুণী বধূর মাথা কাটার পরে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সেই কারণে বাকি দেহটা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফ্ল্যাটের শৌচাগারে। সেখানে এক-একটি অংশ কাটার পরে সেগুলি বারবার জল দিয়ে ধোয়া হয়েছিল। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ওই প্রক্রিয়া চলায় খালি হয়ে গিয়েছিল আবাসনের জলাধার। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, ১৮ জুলাই ভোরে তাঁরা কেউ জল পাননি। কেন হঠাৎ সব জল শেষ হয়ে গিয়েছিল, তা-ও তাঁরা বুঝতে পারেননি।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আরও জেনেছে, ১৭ জুলাই, অর্থাৎ ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সোনি তাঁর কাপড়ের দোকানেই ছিলেন। সেখানে এসেই তাঁকে ছ’টি ঘুমের ওষুধ মেশানো চা দিয়ে গিয়েছিল উপেন্দ্র। ট্যাবলেটগুলি জোগাড় করেছিল দিলবর। চা খেয়ে ঝিমুনি আসতেই স্বামীকে ফোন করে ওই তরুণী জানতে চেয়েছিলেন, চায়ে কী মেশানো হয়েছে? এর পরে অসুস্থ বোধ করায় শিবপুরের ফ্ল্যাটে চলে আসেন সোনি। সেই সময়ে তাঁর ছেলে ও মেয়ে টিউশন নিতে গিয়েছিল। বাড়িতে ফিরে সোনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তেই উপেন্দ্র, দিলবর ও সেকলিন এসে ঢোকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরে ছেলেমেয়েকে এনে একটি ঘরে আটকে রাখে উপেন্দ্র। বাবা-মা কাজের জন্য বাইরে থাকায় ঘরে দীর্ঘক্ষণ একা থাকার অভ্যাস ছিল ওই শিশুদের। জেরায় জানা গিয়েছে, সোনিকে খুনের পরে দিলবর ও সেকলিনের নির্দেশ মতোই তাঁর দেহ কাটতে থাকে উপেন্দ্র। সেই কাজে হাত লাগায় ওই দুই যুবকও। দেহাংশ যাতে বেশি না ফোলে, তার জন্য শরীরের ভিতরের সমস্ত অংশ কেটে বার করা হয়েছিল। বালির ওই গঙ্গার ঘাটে তল্লাশি চালিয়ে কাদা থেকে আরও একটি বড় ভোজালি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, খুনের জন্য দেওয়া সুপারির ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা দিলবর ও সেকলিনের থেকে মিলেছে।

জেরায় ধৃতেরা দাবি করেছে, খুনের ১৫ দিন আগে গঙ্গার ঘাটে ‘রেকি’ করে গিয়েছিল উপেন্দ্র ও দিলবর। ঘটনার দিন ৩০০ টাকা ট্যাক্সিভাড়া দিয়ে বালিতে এসে ঘাটে যাওয়ার জন্য রিকশাচালককে ৬০ টাকা দিয়েছিল ওই তিন জন। খুন এবং দেহ লোপাটের জন্য দিলবর ও সেকলিনের সঙ্গে এক লক্ষ টাকার চুক্তি হয়েছিল উপেন্দ্রর। খুনের সময়ে তিরিশ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা সে তিন মাস পরে দেবে বলেই জানিয়েছিল। তবে ওই তিন মাস কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ থাকবে না বলেও পরিকল্পনা হয়েছিল। ধৃতেরা জেরায় দাবি করেছে, তারা ভেবেছিল, ওই তিন মাসে দেহাংশ জলে ডুবে যাবে।

Crime Murder Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy