Advertisement
E-Paper

অব্যবস্থার ফাঁক গলেই বেপরোয়া দুষ্কৃতীরা

ব্যাঙ্কগুলির তরফে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সতর্ক করছে পুলিশও। কেউ কেউ সতর্ক হলেও অনেকে এখনও শিকার হচ্ছে সাইবার জালিয়াতির। এর থেকে বাঁচার উপায় কি? আজ দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৮

ব্যাঙ্কগুলির তরফে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সতর্ক করছে পুলিশও। কেউ কেউ সতর্ক হলেও অনেকে এখনও শিকার হচ্ছে সাইবার জালিয়াতির। এর থেকে বাঁচার উপায় কি? আজ দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি।

ব্যাঙ্ক জালিয়াতির সঙ্গেই লাফিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। কিন্তু পুলিশি পরিকাঠামো না থাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতারিতরা কোনও সুহারা পাচ্ছেন না। দুষ্কৃতীদেরও শাস্তি হচ্ছে না। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করে দ্বিগুণ উৎসাহে তারা প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভিন রাজ্যের প্রতারণাচক্র। যে কারণে পুলিশের কাজটা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। জেলায় একের পর এক সাইবার অপরাধের ঘটনার প্রতিকারে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে হুগলিতে।

ঠিক কী ধরনের পরিকাঠামো নিয়ে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করে জেলা পুলিশ? ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বা সাইসাব অপরাধের সংখ্যাই বা কত?

প্রশাসন সূত্রে খূর, বর্তমানে হুগলিতে তিনটি মহিলা থানা-সহ ২৬টি থানা রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ১০টি করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির খবর আসছে। প্রতি ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের অফিসার বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে গ্রাহকের ডেবিট কার্ডের নম্বর, পিন নম্বর হাতিয়ে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। উত্তরপাড়ায় এক ব্যাঙ্ককর্মী পর্যন্ত ওই ফাঁদে পড়েছেন।’’ এ ধরনের অপরাধ রুখতে জেলার থানাগুলির ক্ষেত্রে পুলিশের কার্যত কোনও পরিকাঠামোই নেই। হুগলিতে কোনও সাইবার থানা নেই। নেই কোনও নির্দিষ্ট সাইবার সেল। এই ব্যাপারে থানায় প্রশিক্ষিত উপযুক্ত পুলিশ অফিসারও নেই। এমন কী যে সব পুলিশ অফিসার রয়েছেন তাঁদের এ সব বিষয়ে কোনও প্রশিক্ষণ নেই। ফলে থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে ওসি বা আইসি-কে বাধ্য হয়েই প্রশিক্ষণহীন অফিসারদের উপরই তদন্তের ভার দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট অফিসার জেলা সদরে সেই অভিযোগ পাঠিয়ে দেন। জেলা সদর থেকে আইবি-কে সেই নির্দিষ্ট অভিযোগ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর পাঁচটা সাধারণ ঘটনার নীচে সাইবার অপরাধের তদন্তের ফাইল চাপা পড়ে যায়।

পরিকাঠামো বলতে যা আছে তা হল, জেলা সদরে একজন অফিসারের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ কর্মী আছেন। মোট চার থেকে পাঁচজনের সেই সাইবার সেল। তাঁদের আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে কখনও কখনও অন্যত্র ডেকে নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে জেলার সাইবার সেল কার্যত কর্মীহীন হয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের এক অফিসার জানান, জালিয়াতদের ফোন মূলত আসছে ভিন রাজ্য থেকে। এমন জায়গা থেকে ফোন করা হচ্ছে, যেখানে ধূ ধূ গ্রাম। সেখা‌ন থেকে অপরাধী ধরে আনা কষ্টকর। জালিয়াত ধরা গেলেও টাকা উদ্ধার করা কঠিন। এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনের ধারাও খুব কড়া নয়।

রাজ্যে লালবাজার, আইবি এবং সিআইডি-র নিজস্ব পরিকাঠামো রয়েছে সাইবার অপরাধ মোকাবিলার ক্ষেত্রে। রাজ্য গোয়েন্দা

পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন,‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঝাড়খন্ড, ছত্তীশগঢ় থেকে ফোনগুলি আসে। একটা মোবাইলের সিম একবারই মাত্র ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করাও দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’

যদিও প্রতারিতদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের অসাধু কর্মীর মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য জালিয়াতদের হাতে চলে যাচ্ছে। পুলিশ এই অভিযোগকে একেবারে উড়িয়ে না দিলেও সাধারণ মানুষের জালিয়াতদের ফাঁদে পা দেওয়াকেই দায়ী করছেন। তাদের বক্তব্য, মানুষ সচেতন না হলে এমন ঘটনা বন্ধ হওয়া মুশকিল। বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক কর্মসূচিতে এ সব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy