Advertisement
E-Paper

খালে গাড়ি, মৃত্যু চুঁচুড়ার মা-মেয়ের

উত্তরবঙ্গ বেড়িয়ে ফেরার ট্রেন ধরতে চুঁচুড়ার একই পরিবারের চার জন সোমবার বিকেলে গাড়িতে নিউ জলপাইগুড়ি আসছিলেন। কিন্তু আর ফেরা হল না দু’জনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৪
আকস্মিক: মৃত জয়শ্রী ও শ্রীপর্ণা। নিজস্ব চিত্র

আকস্মিক: মৃত জয়শ্রী ও শ্রীপর্ণা। নিজস্ব চিত্র

উত্তরবঙ্গ বেড়িয়ে ফেরার ট্রেন ধরতে চুঁচুড়ার একই পরিবারের চার জন সোমবার বিকেলে গাড়িতে নিউ জলপাইগুড়ি আসছিলেন। কিন্তু আর ফেরা হল না দু’জনের।

গজলডোবায় ক্যানাল রোডে একটি মোটরবাইকে পাশ কাটাতে গিয়ে রাস্তার পাশের ব্যারিকেড ভেঙে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক খালে গিয়ে পড়ে গাড়িটি। মৃত্যু হয় চুঁচুড়ার জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় (৬৮) এবং তাঁর মেয়ে শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের (৪৮)। আহত জয়শ্রীদেবীর পুত্রবধূ প্রসূনা এবং তাঁর বছর দুয়েকের নাতি। তবে, চালকের তেমন চোট লাগেনি।

ওই রাতেই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছে যায় চুঁচুড়ায়। মঙ্গলবার বিমানে শিলিগুড়ি পৌঁছে যান ছত্তীসগঢ়ে কর্মরত প্রসূনার স্বামী অয়ন। তিনি বলেন, ‘‘যে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় পড়ে বলে শুনলাম। বাইকটি ওই ভাবে হঠাৎ গাড়ির সামনে না-এসে পড়লে মা-দিদিকে হারাতে হতো না। যান চলাচলে আরও নিয়ন্ত্রণ

থাকা উচিত।’’

চুঁচুড়ার একটি ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কেটে গত ১৭ অক্টোবর রওনা দিয়েছিলেন প্রসূনারা। একটি গাড়ি নিয়ে তাঁরা দার্জিলিং, কালিম্পং, লাভা, রিশপ ঘোরেন। প্রসূনা জানিয়েছেন, সোমবার তিস্তা ব্যারাজ ঘুরে রাতে গজলডোবা বাজার থেকে গাড়িটি ক্যানাল রোড হয়ে নিউ জলপাইগুড়ির দিকে আসছিল প্রায় ৫৫ কিলোমিটার বেগে। তিনি ছেলেকে নিয়ে সামনে চালকের পাশের আসনে বসেছিলেন। পিছনের আসনে বসেছিলেন তাঁর শাশুড়ি এবং ননদ। হঠাৎই একটি বাঁকের মুখে ওই দুর্ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথমে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য গাড়ির চালকেরা উদ্ধারের চেষ্টা চালান। তারপরে স্থানীয় বাসিন্দারাও চলে আসেন। চার জনকে প্রথমে আমবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানে জয়শ্রীদেবী এবং তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।

চোখের সামনেই দরজা বন্ধ অবস্থায় শাশুড়ি এবং ননদকে গাড়ি সমেত ডুবে যেতে দেখেন প্রসূনা। তিনি বলেন, ‘‘হাঁটুতে চোট পেয়েছি। জল ঢোকায় গাড়িটা ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছিল। চালক গাড়ির বাইরে বেরোতে পেরেছিলেন। কোনও রকমে ছেলেকে ওঁর হাতে দিয়ে আমি বেরিয়ে পিছনের দরজা খোলার চেষ্টা করি। কিন্তু প্রবল স্রোতে পারছিলাম না। সাঁতার জানি না। কোনও রকমে নিজেকে বাঁচাই।’’

ফার্ম সাইড রোডে মায়ের কাছেই থাকতেন শ্রীপর্ণা। বাড়ি যাতে ফাঁকা না-থাকে, সে জন্য এ ক’দিন ওই বাড়িতে রয়েছেন অয়নের শ্বশুর-শাশুড়ি। মঙ্গলবার সকালে ওই বাড়িতে পড়শিরা ভিড় জমান। অয়নের শ্বশুর সঞ্জয় সিংহরায় বলেন, ‘‘কী থেকে কী হয়ে গেল! ভাবতে পারছি না। মেয়ে এবং নাতি বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছে। ওরা সুস্থই আছে।’’

Gajaldoba Car Accident Chinsurah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy