সুপারের ঘরে বিক্ষোভ রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের। ছবি: তাপস ঘোষ।
হাসপাতালের গাফিলতিতে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র বুধবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। গাফিলতির অভিযোগ মেনে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন সুপার। হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চিকিৎসায় হাসপাতালের গাফিলতি প্রমাণ হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে ব্যান্ডেলের কেওটা ফুলবাগানের বাসিন্দা অমল বল (৭০) শ্বাসকষ্টের রোগ নিয়ে চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই রাতেই একই রোগ নিয়ে মগরার গজঘণ্টার বাসিন্দা শম্ভূ অধিকারীও (৪০) ভর্তি হন। দু’জনেরই পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পর স্যালাইন, অক্সিজেন দেওয়ার পর রোগীরা কিছুটা ভাল ছিলেন। বিপত্তি ঘটে ভোরের দিকে। দুই বাড়ির লোকজন দেখেন তাঁদের রোগীর অবস্থা ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। কর্তব্যরত নার্সকে সঙ্গে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে সব জানান। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় সেখানে দায়িত্বে থাকা নার্স জানান, কোনও চিকিৎসক না থাকার জন্য এখন কিছু করা যাবে না।
অমলবাবুর ছেলে সুপন বলের অভিযোগ, ‘‘বাবার অবস্থা দেখে নার্সের কাছে চিকিৎসককে ডাকার অনুরোধ করলে তিনি তাতে কান না দিয়ে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। চিকিৎসা নিয়ে এই টানাপড়েনের মধ্যে সকাল ৬টা নাগাদ বাবার মৃত্যু হয়।’’ একই জায়গায় ভর্তি ছিলেন শম্ভূবাবু। তাঁর পরিবারের তরফে সঞ্জয় ঘোষও একই অভিযোগ করেন। তাঁদের বক্তব্য, সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে শম্ভুবাবুর মৃত্যু হত না।
চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় দুই রোগীর মৃত্যুর কথা চাউর হতেই হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃত রোগীদের আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা ভিড় জমাতে থাকেন হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ। রোগীর পরিজনরা কর্তব্যরত নার্সদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে হাসপাতালের পক্ষ থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। চুঁচুড়া থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই রোগীর পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল সুপারের কাছে ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
গাফিলতির অভিযোগ স্বীকার করে হাসপাতালের সুপার ঊর্ধ্বেনেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্মীদের মানবিক হওয়া দরকার। রোগীর অথবা তার পরিজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে সঠিক চিকিৎসা হলেও তা নিয়ে হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ওই দুই রোগীর মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। রোগীর আত্মীয়েরা যে অভিযোগ করেছেন, তার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy