সুবল বিশ্বাস ও শিখা বিশ্বাস।
বাইরে ঠান্ডার জন্য তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়া সেরে শুয়ে পড়েছিলেন বিশ্বাস দম্পতি। মাঝরাতে হঠাৎই সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। স্বামী-স্ত্রী দরজা খুলে বাইরে বেরোতেই দেখেন দরজার সামনে পড়ে আছে এক সদ্যোজাত শিশুকন্যা। কান্নার আওয়াজ তারই।
কোথা থেকে কে, কেন এখানে তাকে রেখে গেল—এ সব ভাবতে ভাবতেই তাড়াতাড়ি শিশুটিকে নিয়ে ঘরে ঢুকে যান তাঁরা। না হলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয় রয়েছে। রাতভর যত্নের সঙ্গেই শিশুটিকে আগলে রাখেন তাঁরা। সকালে প্রতিবেশীদের জানান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। সোমবার রাতে চুঁচুড়ার কেওটার ঘটনা।
উদ্ধার সদ্যোজাত।— ছবি: তাপস ঘোষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কেওটা সুভাষপল্লিতে থাকেন সুবল বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী শিখাদেবী। নিঃসন্তান ওই দম্পতি এমন ঘটনায় অবাকই। মঙ্গলবার পুলিশ শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সময় কাপড়ের খুঁটে চোখ মুছছিলেন শিখাদেবী। বললেন,‘‘পনেরো বছর বিয়ে হয়েছে। কোনও সন্তান নেই। ওকে পেয়ে মুহূর্তের জন্য সেই শোক ভুলেছিলাম। কিন্তু পরে ভাবলাম পুলিশকে তে জানাতেই হবে। তবে ওকে দত্তক নেওয়ার জন্য যা যা করণীয় তাতে আমরা রাজি।’’ সুবলবাবুর কথায়, ‘‘শীতের রাতে এ ভাবে কে বা কারা ওকে ফেলে গেল জানি না। মানুষ যে কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।’’
চুঁচুড়া হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘খোলা জায়গায় ঠান্ডায় শিশুটি পড়েছিল। ওর শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখা হয়েছে। খুব সাবধানে চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে উঠলে প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী যা করণীয় তাই করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy