Advertisement
E-Paper

শিক্ষক নেই, তবু উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য অব্যাহত

চার বছরেও মেলেনি শিক্ষক। তাতেও দমানো যায়নি গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগকে। এখানকার চার ছাত্রছাত্রীই এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হল। তবে, শুধু এ বারই নয়। আবাসিক এই স্কুলের সাফল্যের একই রকম হার দেখা গিয়েছিল গত তিন বছরও। সব ছাত্রছাত্রীই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিল।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০১:৫৫

চার বছরেও মেলেনি শিক্ষক। তাতেও দমানো যায়নি গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগকে। এখানকার চার ছাত্রছাত্রীই এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হল। তবে, শুধু এ বারই নয়। আবাসিক এই স্কুলের সাফল্যের একই রকম হার দেখা গিয়েছিল গত তিন বছরও। সব ছাত্রছাত্রীই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিল।

ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক না থাকা সত্ত্বেও পঠনপাঠন চালানো হলেও যে ভাবে বছর বছর পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে, তাতে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল শিক্ষা দফতরে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও শিক্ষক মিলছে না।

শিক্ষক না থাকলেও কী ভাবে সম্ভব হচ্ছে পঠনপাঠন চালানো? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, এখানকার বাংলা বিভাগের শিক্ষক এবং পাশের বিএড কলেজের ছাত্রদের দিয়েই পঠনপাঠন সামলানো হচ্ছে। তাতেই সাফল্য মিলছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শঙ্কর খাঁড়া বলেন, ‘‘আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্তত ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এমন ছাত্রছাত্রীদেরই ভর্তি করি। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে তাদের ইংরেজি মাধ্যমে গুরুত্ব দিয়েই পড়ানো হয়। ইংরেজি মাধ্যমেই তারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। শিক্ষক না থাকলেও তো আর চুপ করে বসে থাকা যায় না। তাই বাংলা বিভাগের শিক্ষক এবং কলেজের ছাত্রদের সাহায্য নেওয়া হয়।’’

২০১০ সালে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতি জেলায় এক বা একাধিক স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন হবে। যে সব স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়, সেখানেই বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম বিভাগ খোলার কথা বলা হয়। সেইমতো পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ ইংরেজি মাধ্যম খুলতে চেয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করেন। তাঁরা অনুমতি পেয়েও যান। এর জন্য নিজের খরচে তাঁরা আলাদা শ্রেণিকক্ষ তৈরি করেন। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁদের স্কুলের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগে ছাত্র চেয়ে আবেদন করেন। সেইমতো প্রথম বছরেই ৩৫ জন ছাত্রছাত্রী রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ভর্তি হয়।

কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক না থাকায় বছর বছর পডুয়ার সংখ্যা কমছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। অথচ, ছাত্রছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাই শুধু নয়, প্রয়োজনীয় বইপত্রও কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বছর যে চার ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হল, তাদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গুরের দ্বিজপ্রসাদ সাঁতরা (৩৮১), দক্ষিণ ২৪ পরগনার সৌমেন গুড়িয়া (৩৬৭), আমতার খড়িয়পের সৌমিক মান্না (৩১৮) এবং কাকদ্বীপের সাগরিকা জেঠি (৩০৭)। আগামী বছরও এখান থেকে চার জন উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। সৌমিক বলে, ‘‘স্কুল পাশে দাঁড়ায়, তাই উচ্চ মাধ্যমিকের ফল এত ভাল হয়।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে তাঁদের জানানো হয়েছিল ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য চার জন শিক্ষক দেওয়া হবে। কিন্তু একজন শিক্ষকও দেওয়া হয়নি। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য, সেই সন্তোষকুমার দাস বলেন, ‘‘প্রতিবারেই স্কুল শিক্ষা দফতর প্রতিশ্রুতি দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ইংরেজি বিভাগে পড়ানোর জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। কিন্তু এখনও কিছুই হল না। তাই ছাত্রছাত্রী কমছে। তবে হাল ছাড়ছি না। যতদিন পারব নিজেদের উদ্যোগে বিভাগ চালিয়ে যাব।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস জানান, ওখানে স্কুল সার্ভিস কমিশনেরই শিক্ষক নিয়োগ করার কথা। বিষয়টি কমিশনকে জানানো হয়েছে।

gangadharpur vidyamandir HS result 2015 english school teacher southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy