দুর্ভোগ: লাইন পেরিয়ে এভাবেই নিত্যযাত্রা। নিজস্ব চিত্র
বছর চারেক আগে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার ডানকুনিতে চালু হয়েছিল উড়ালপুল। তাতে যানবাহন যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু তখন থেকেই রেললাইন পারাপার যাতে না-করতে হয়, সে জন্য ওই এলাকায় একটি আন্ডারপাসের দাবি তুলেছিলেন সাধারণ মানুষ। ডানকুনি পুরসভার পক্ষ থেকেও তৎকালীন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী এবং রেলকর্তাদের চিঠি দিয়ে ওই দাবির কথা জানানো হয়। কিন্তু এখনও সেই আন্ডারপাস না-হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ কমেনি।
ডানকুনি পুরসভার চেয়ারম্যান হাসিনা শবনম বলেন, ‘‘আন্ডারপাসের জন্য আমরা গণস্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র রেল দফতরে জমা দিয়েছি। বারবার চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল মিলছে না। অথচ, রেল আন্ডারপাস তৈরির জন্য জমি চিহ্নিত করে রেখেছে।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, ডানকুনিতে আন্ডারপাসের জন্য কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি।
২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডানকুনির লালবাবা রোড থেকে রেললাইনের পূর্ব দিকে মিলন সঙ্ঘের মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত উড়ালপুলটির উদ্বোধন করেছিলেন। ওই রাতেই রেলের তরফে নিয়মমাফিক উড়ালপুলের নীচে রেললাইন সংলগ্ন রাস্তা লোহার রড দিয়ে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলেই সমস্যা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কারণ, উড়ালপুলটি ডানকুনিকে কার্যত দু’টি ভাগে ভাগ করেছে। ডানকুনি পুরসভার মোট ওয়ার্ড ২১। তার মধ্যে ১১টি ওয়ার্ড পড়ছে উড়ালপুলের পূর্ব প্রান্তে। সে দিকেই রয়েছে পুরসভা ভবন এবং অধিকাংশ ব্যাঙ্ক। পশ্চিম প্রান্তে পড়ছে সাতটি ওয়ার্ড। সে দিকে রয়েছে স্কুল-বাজার। বাকি তিনটি ওয়ার্ড রয়েছে রেললাইন ঘেঁষে। তাই নানা প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে এখনও রেললাইন টপকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কাঁধে সাইকেল, হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে মানুষ রেললাইন পেরোচ্ছেন, ডানকুনিতে এই ছবি প্রায় রোজই দেখা যায়।
আন্ডারপাস হলে এই দুর্ভোগ বন্ধ হবে বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ। হাতে টানা ভ্যানে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ করেন উড়ালপুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর বর্মন। তিনি বলেন, ‘‘উড়ালপুল হওয়ার পর থেকে পশ্চিম দিকে জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি। আন্ডারপাস হলে সমস্যা হতো না।’’ নিউ রামকৃষ্ণ পল্লির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাসের অভিযোগ, ‘‘সকালে বাজার করতে যেতে হবে ভাবলেই আতঙ্ক হয়। আন্ডারপাস খুব দরকার। রেল লাইন পারাপারের সময় তো দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy