Advertisement
E-Paper

টাকা ফেরত কোন পথে, চুপ প্রশাসন

আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের প্রথম তালিকায় বাড়ি অক্ষত থাকা সত্ত্বেও  শাসকদলের নেতানেত্রী, তাঁদের আত্মীয়-স্বজন বা ঘনিষ্ঠরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৬:১৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রশাসন থেকে শাসকদল— ঠারেঠোরে সবাই অনিয়ম মেনেছে। কিন্তু আমপানের ক্ষতিপূরণ পাওয়া ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের কী হবে, তা নিয়ে হুগলিতে প্রশাসনের মুখে কুলুপ। কোনও পদক্ষেপও চোখে পড়ছে না। কেউ কেউ বিচ্ছিন্ন ভাবে টাকা ফেরত দিলেও সেই সংখ্যা যৎসামান্য বলে বিরোধীদের দাবি।

আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের প্রথম তালিকায় বাড়ি অক্ষত থাকা সত্ত্বেও শাসকদলের নেতানেত্রী, তাঁদের আত্মীয়-স্বজন বা ঘনিষ্ঠরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বঞ্চিত হন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা। এ নিয়ে হইচই হওয়ায় নবান্ন জানায়, সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হবে। আবেদনপত্র ধরে তদন্ত হবে। যদিও, বহু ব্লকেই নয়া তালিকা বা তদন্তের চিত্র পরিষ্কার নয়। টাকা ফেরত নিয়েও উচ্চবাচ্য নেই। কারা টাকা ফেরত দিয়েছেন, তাঁদের নাম প্রকাশেও সংশ্লিষ্ট দফতরের অনীহা রয়েছেবলে অভিযোগ।

বিডিওদের একাংশের বক্তব্য, টাকা ফেরতের কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সম্প্রতি সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়, ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক সরেজমিনে তদন্ত করবেন। যদিও তদন্তের রূপরেখা অস্পষ্ট। যে সব বাড়ি সারানো হয়েছে, সেগুলি কিসের ভিত্তিতে তদন্ত হবে, মিথ্যা আবেদনের ভিত্তিতে টাকা পেলে ফেরত নেওয়া হবে কিনা, এমন কোনও নির্দেশ আসেনি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘কারও কাছে সরকারি টাকা চলে গেলে ফেরত দিতেই পারেন। এ জন্য প্রশাসনিক দফতরে টিআর-৭ ফর্ম পাওয়া যায়।’’ কিন্তু প্রশাসন চাপ না দিলে এমন শুভবুদ্ধি ক’জনের হবে, বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলছেন।

গোঘাট-১ ব্লক অফিসের গাড়িচালক সুজিত দে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তাঁর দোতলা মাটির বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি দাবি করে প্রতিবেশীরা প্রশাসনকে জানান। সুজিতের দাবি, ‘‘রান্নাঘরের টিনের চালার একাংশ ঝড়ে ভেঙে যাওয়ায় আবেদন করেছিলাম। প্রশাসন তদন্ত না করলে আমার কী দায়! টাকা ফেরত দিতে বললে দেব।’’

গোঘাটেরই রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ায় বাণী পাঁজার পাকা বাড়ির ক্ষতি না হলেও টাকা পেয়েছেন। তাঁর ছেলে বিমান বলেন, ‘‘রান্নাঘরের টিন উড়ে গিয়েছিল। কতটা ক্ষতি হলে আবেদন করা যাবে, জানা ছিল না। প্রশাসন বললে টাকা ফিরিয়ে দেব।’’ হরিপালের আশুতোষ পঞ্চায়েতের নির্মল মালিক ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজ়ার। পাকা বাড়িতে থাকলেও ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গাছ পড়ে রান্নাঘর ভেঙেছে। তাই টাকা পেয়েছি।’’ এমন বক্তব্য অনেকেরই।

অন্য দিকে, বহু মানুষের অভিযোগ, কাঁচা বাড়ি ভেঙে গেলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। হরিপালের একটি পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়িতে এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। বিরোধী দলের বিক্ষোভ চলছে জেলা জুড়েই। বিজেপি নেতা স্বপন পালের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা সত্যিই টাকা ফেরত দিলে ভাল। কিন্তু চোর কি সাধু হয়!’’ জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন টাকা ফেরত দেবে, সেই চিন্তা ভুল। যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তা কি ফেরতের জন্য?’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের দাবি, কেউ যোগ্য না হয়েও টাকা পেয়ে থাকলে তা ফেরতের জন্য দলের চাপ আছে।

Cyclone Amphan Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy