Advertisement
E-Paper

সপ্তাহ পার, রাস্তায় এখনও দাঁড়িয়ে ট্রাক

মাঝেরহাটকাণ্ডের পর কলকাতায় পণ্যবাহী ভারী ট্রাক চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পরিবহণ দফতর সম্প্রতি কুড়ি বা তার বেশি চাকার ট্রেলার গোটা রাজ্যেই চালানো যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

ডানকুনি

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৯
সারি: দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

সারি: দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

এক সপ্তাহ পার। কিন্তু মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের জেরে ডানকুনিতে দাঁড়িয়ে থাকা শ’য়ে শ’য়ে পণ্যবাহী ট্রাক-ট্রেলার কবে কলকাতায় ঢোকার ছাড়পত্র পাবে তা নিয়ে সংশয়ে চালক-মালিকেরা। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে।

মাঝেরহাটকাণ্ডের পর কলকাতায় পণ্যবাহী ভারী ট্রাক চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পরিবহণ দফতর সম্প্রতি কুড়ি বা তার বেশি চাকার ট্রেলার গোটা রাজ্যেই চালানো যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর পরেই শুরু হয় পুলিশি কড়াকড়ি। ভিন্‌ রাজ্য থেকে বহু ট্রাক ডানকুনি হয়ে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যায়। আবার এ রাজ্যের প্রয়োজনেও পণ্য নিয়ে আসে। ডানকুনি থেকে সরাসরি খিদিরপুর বন্দর হয়েও জাহাজে পণ্য পাঠানো হয়। বহু ট্রাকই ডানকুনিতে দাঁড়িয়ে!

ডানকুনির হিমালয় প্লাজার ট্রাক পার্কিংয়ে অন্তত ২৫০টি ট্রাক-ট্রেলার বুধবার পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখানকারই জৈন পার্কিংয়ে ভিড় করেছে আরও অন্তত ৩০০ ট্রাক। রাজ্যের ট্রাক-মালিক সংগঠনের সহ-সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতি জটিল। কবে মিটবে নিশ্চয়তা নেই। রাস্তায় তো পুলিশ ওজন মাপা শুরু করেছে। ওভারলোডিং হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। না-হলে ট্রাক চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক করা হোক।’’

ক’দিন আগে জেলা পুলিশ প্রশাসন এবং কয়েকটি কমিশনারেটের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন এডিজি (ট্রাফিক) বিবেক সহায়। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘এখন কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দিক থেকে নির্দিষ্ট নিয়ম এবং সময় মেনে পর্যায়ক্রমে ট্রাক ছাড়া হচ্ছে। পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। পুরো স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

মাঝেরহাট-কাণ্ডের ঠিক আগেই উত্তরপ্রদেশ থেকে যন্ত্রাংশ বোঝাই ট্রাক নিয়ে ডানকুনি পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজু দুবে। সেই যন্ত্রাংশ তাঁর বাংলাদেশে পাঠানোর কথা। কিন্তু সেতু ভাঙার জন্য যে আর এগোতে পারবেন না, ভাবতে পারেননি। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে কী ভাবে ট্রাক পাঠাব? পুলিশ আটকে দিচ্ছে। এখান থেকে পেট্রাপোল হয়ে একটি মিলের যন্ত্রাংশ যাওয়ার কথা। কিন্তু কোনও ট্রাক যেতে চাইছে না। আমার খরচ বাড়ছে। আবার মাল পাঠাতে না পারলে আমি টাকা পাব না।’’ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ট্রাক-চালক মহম্মদ আশিকও। তিনি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ থেকে এসি মেশিন এনেছিলেন। ডানকুনিতে মাল খালাসও করেছেন। তবু তাঁর দুশ্চিন্তা, ‘‘অন্য সময়ে ফেরার পথে আমরা এখান থেকেই মাল বোঝাই করে নিয়ে যাই। কিন্তু এ বার টানা তিন দিন দাঁড়িয়ে। কোনও ভাড়া পাচ্ছি না। হোটেলে আমার থাকা-খাওয়ার খরচ বাড়ছে। ট্রাক-মালিকের ক্ষতি হচ্ছে।’’ পঞ্জাব থেকে সাহেদ আলি ট্রাকে করে একটি মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার যন্ত্রাংশ এনেছেন। তাঁরও ক্ষোভ, ‘‘রাজারহাটে মাল খালাস করার কথা। কিন্তু পাঁচ দিন ধরে কলকাতায় ঢুকতে পারছি না।’’

হিমালয় প্লাজার ট্রাক পার্কিংয়ে ক্রেনে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ করেন মদন সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘দশ দিনে কাজ একেবারে কম হচ্ছে। কারণ এখান থেকে গাড়ি যাচ্ছেই না। গাড়ি গেলে তো মাল ওঠানো-নামানোর কাজ করব। রোজগার কমে যাচ্ছে।’’

Truck Wait Dankuni Majerhat Bridge Collapse
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy