Advertisement
০৫ মে ২০২৪
ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, দাবি পুরপ্রধানের

খোলা নর্দমাই মশার আঁতুড় উত্তরপাড়ায়

পুরসভা অবশ্য দাবি করেছে, নিয়মিত ওই সব নর্দমায় মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোধ প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সাফাই: এলাকা থেকে আবর্জনা সরানো হচ্ছে।নিজস্ব চিত্র

সাফাই: এলাকা থেকে আবর্জনা সরানো হচ্ছে।নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৯:১০
Share: Save:

শহরের কিছু এলাকায় নর্দমা চলে গিয়েছে মাটির তলায়। সেখানকার মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে।

কিন্তু যে সব জায়গায় খোলা নর্দমা রয়েছে, সেখানে মশার জ্বালায় নাজেহাল সকলে।

গত বার বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল উত্তরপাড়ায়। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল। তখনই স্বাস্থ্য দফতর এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ঠিক করে বেলাগাম জ্বরকে বাগে আনতে বছরভর কর্মসূচি নেওয়া হবে। তার পরেও এ বার মশার হাত থেকে রেহাই মিলছে না শহরের মালিকপাড়া, দোলতলা, মধ্য ভদ্রকালী বা কোতরঙের মতো কিছু এলাকার বাসিন্দাদের। কারণ, ওই সব জায়গাতেই রয়েছে খোলা নর্দমা। নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় সেই সব নর্দমায় প্লাস্টিক জমে গত রোধ করেছে নিকাশির এবং বংশবৃদ্ধি ঘটছে মশার, এমনটাই অভিযোগ বাসিন্দাদের।

পুরসভা অবশ্য দাবি করেছে, নিয়মিত ওই সব নর্দমায় মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোধ প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহ করছেন। এলাকা পরিষ্কার থাকছে কিনা, তা দেখার জন্য মেয়েদের নিয়ে একশোরও বেশি দল গড়া হয়েছে। লিখিত আবেদন করে বিল মিটিয়ে দেওয়া হলে পুরসভার পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত জায়গাও পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেও কাজ করছি।’’

পরিবেশবিদদের অনেকের মতে, কোনও এলাকায় মশার বাড়বাড়ন্ত অনেকটাই নির্ভর করে সেখানকার নিকাশি ব্যবস্থার উপর। এটা ঠিক যে গত বছর থেকেই উত্তরপাড়া পুর এলাকার নিকাশি নিয়ে নতুন পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুরসভা। মূলত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় নর্দমা মাটির নীচে দিয়ে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়েছে। কাঁঠালবাগান এলাকা দিয়ে সেই কাজ শুরু হয়। পরবর্তী পর্যায়ে শখের বাজার, হিন্দমোটর স্টেশন রোড, উত্তরপাড়া হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন পরিকল্পনা দফতরের টাকায় সেই কাজ চলছে। কিন্তু এখনও খোলা নর্দমা রয়েছে গিয়েছে অনেক জায়গাতেই।

মশা নিয়ে পুরসভার তরফে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের দাবি, যে সব প্রজাতির মশা রোগ ছড়ায়, সেগুলি এক থেকে দু’কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত উড়তে পারে। ফলে, যে সব এলাকায় মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে, সেখান থেকে মশা অনায়াসে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। তাই সহজে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তবে, লার্ভা মরছে।

সাধারণ মানুষের আরও একটি ক্ষোভের জায়গা উত্তরপাড়া হাসপাতাল নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, যেখানে মানুষ সুস্থ হতে যাবেন, সেই হাসপাতালও মশার আঁতুরঘর। সেখানে পুকুর অপরিষ্কার, হাসপাতালের চৌহদ্দি জঙ্গলে ভরা। নানা দিকে আবর্জনা, জঞ্জাল। পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের দাবি, ‘‘হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি পরিষ্কার করাবেন বলে জানিয়েছেন। কারণ, পুরসভার যা পরিকাঠামো, তাতে হাসপাতালের মতো বড় এলাকা নিয়ম করে পরিষ্কার রাখা কঠিন। এ জন্য হাসপাতালের নিজস্ব বিভাগ রয়েছে।’’

এখন দেখার, সেই সাফাই কবে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mosquito Drainage মশা নর্দমা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE