পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দুষ্কৃতী যে সেখানে দাঁড়িয়েছিল তা বুঝতে পারেননি তারাদেবী। রাস্তাটিও প্রায় ফাঁকাই ছিল। সেই সুযোগে ওই দুষ্কৃতী তারাদেবীকে প্রথমে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এর পরে ছোরা দিয়ে তাঁর উপর হামলার চেষ্টা করে। গলা টিপে ধরলে ওই বৃদ্ধা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তিনি চিৎকারের চেষ্টা করায় দুষ্কৃতী তারাদেবীর ডান হাতে ছোরার কোপ বসিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বৃদ্ধা লুটিয়ে পড়েন। তাঁর হাত থেকে বালা এবং আংটি ছিনিয়ে ওই দুষ্কৃতী গলি দিয়ে স্টেশনের দিকে চলে যায় বলে অভিযোগ।
তারাদেবীকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর ক্ষতস্থানে ৭টি সেলাই পড়ে। তাঁর পরিবারের তরফে উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারাদেবী বলেন, ‘‘যা ঘটল, তাতে খুব আতঙ্কে আছি। পুলিশ দোষীকে ধরে সাজা দিক। আর কারও সঙ্গে যেন এমন ঘটনা না-ঘটে, তাও দেখা হোক।’’
গত অক্টোবরে ব্যান্ডেলের কাজিডাঙার বৃদ্ধা সুলেখা মুখোপাধ্যায়কে যে ভাবে নলি কেটে খুন করা হয়েছিল, তার পরেই শিল্পাঞ্চলে বয়স্ক মানুষদের নিরাপত্তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। তবে, এই জেলায় রাস্তায় বেরিয়ে বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার তালিকাটা ছোট নয়। গত বছরের জানুয়ারিতে চুঁচুড়ার নারকেলবাগান এলাকায় প্রাতর্ভ্রমণে বেরনো এক বৃদ্ধাকে খুন করে তাঁর হার ছিনিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারও আগে কোন্নগরে ডাকাতি করতে গিয়ে দুষ্কৃতীরা এক বৃদ্ধার উপর অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। গত জুন মাসে উত্তরপাড়ার রামলাল দত্ত লেনে জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে ঘুমন্ত এক বৃদ্ধার গলার হার ছিনিয়েও পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল উত্তরপাড়ার ঘটনা।
শুক্রবার রাতে এ শহরের যে সোনার দোকানে চুরি হয়, সেটি কানাইপুর ফাঁড়ির কাছে, নৈটি রোডে। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীরা কোলাপসিবল গেট ও শাটারের সব মিলিয়ে ২২টি তালা ভাঙে। তারপর লক্ষাধিক টাকার গয়না হাতিয়ে চম্পট দেয়। শনিবার সকালে ঘটনার খবর জানাজানি হয়। পুলিশ তদন্তে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনিতেই শীতের সময় চোরের উপদ্রব বাড়ে। চুরি ঠেকাতে হলে সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর পুলিশি টহলের দাবি জানান তাঁরা। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ফাঁড়ির পাশেই যদি দুষ্কৃতীরা এতগুলো তালা ভেঙে দোকানে ঢোকে, তবে নিরাপত্তার অবস্থাটা সহজেই অনুমেয়।’’