রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলল ভাঙচুর। ভাঙচুরে জখম হলেন এক চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার মিয়ারবেড় এলাকার বাসিন্দা পিণ্টু রক্ষিত (৫৫) বৃহস্পতিবার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করায় চিকিৎসার জন্য চুঁচুড়া হাসপাতালে আনা হয়। পরিবারের লোকজন পিণ্টুবাবুকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখার পর মৃত বলে ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক এ কথা জানানো পরেই গোলমাল শুরু হয়। পিণ্টুবাবুর পরিবার ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন, ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায়। জরুরি বিভাগে ভাঙচুর শুরু করে। ভাঙচুরের চোটে জানালার কাচ ভেঙে জখম হন কর্তব্যরত চিকিৎসক পার্থ বসু। মাঝরাতে আচমকা এমন তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য রোগী ও তাঁদের লোকজন। অনেকে ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। রোগীর আত্মীয়েরা মৃতদেহ নিয়ে চলে যায়। আহত চিকিৎসকের চিকিৎসা শুরু হয়। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ পিণ্টুবাবুর পরিবারের তরফে করা হয়নি বলে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভাঙচুর ও চিকিৎসকের উপরে হামলার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জখম চিকিৎসক। ছবি: তাপস ঘোষ।
হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দু বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘মৃত্যু দুঃখজনক। বৃহস্পতিবার রাতে ওই রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। হাসপাতালের দুই চিকিৎসক রোগীকে বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর মৃত বলে জানান। তাতেই রোগীর পরিবারের লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ভাঙচুর করেন। তার জেরে একজন চিকিৎসক জখম হন।’’
জখম চিকিৎসক পার্থ বসু বলেন, ‘‘পিণ্টুবাবুকে হাসপাতালে আনার পর আমরা চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দেখি আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অথচ রোগীর লোকজন তা মানতে না চেয়ে ভাঙচুর শুরু করলেন। কাচের টুকরো লেগে আমার কপালের বেশ কিছুটা কেটে যায়।’’
হাসপাতালের অন্য কয়েকজন চিকিৎসক জানান, রোগী মৃত বলে ঘোষণার পরেও যে ভাবে হামলা হল তাতে তাঁরা আতঙ্কিত।