Advertisement
E-Paper

কুড়ি বছর আগের পুনরাবৃত্তি চায় ফরাসডাঙা

এক যুগ পরে ফের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে ফ্রান্স। তবে সে বারের পুনরাবৃত্তি চায় না চন্দননগর। তারা চায় দুই দশক আগের পুনরাবৃত্তি। কারণ, সে বার জিনেদিন জিদানের হাতে উঠেছিল খেতাব। আর ২০০৬ সালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট হতে হয়েছিল।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৯:৪০

এক যুগ পরে ফের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে ফ্রান্স। তবে সে বারের পুনরাবৃত্তি চায় না চন্দননগর। তারা চায় দুই দশক আগের পুনরাবৃত্তি। কারণ, সে বার জিনেদিন জিদানের হাতে উঠেছিল খেতাব। আর ২০০৬ সালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট হতে হয়েছিল। ইতালির মাতেরাজ্জিকে ঢুঁসো মেরে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল ফরাসি তারকাকে। চোখের জল ফেলেছিল চন্দননগর।

রাজ্যজুড়ে যেখানে সিংহভাগ জনপদ লাতিন আমেরিকার দুই দেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ‘টাচ’ ফুটবল নিয়ে পাগল, সেখানে আলোর শহর চন্দননগর ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে মোহাবিষ্ট।

চন্দননগর কোনওকালে ছিল ফরাসিদের উপনিবেশ। গঙ্গাপাড়ের এই জনপদের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ফরাসিদের চিহ্ন। ফরাসিদের সৌজন্যে কলকাতার চৌহদ্দির বাইরে রাজ্যে এখানেই প্রথম ফুটপাত আর গ্যাসের আলো দেখেছিলেন মানুষ। গড়ে উঠেছিল স্ট্র্যান্ড, ফরাসি শাসকের নামাঙ্কিত কলেজ, গির্জা। গভর্নর জেনারেল ডুপ্লের কথা শহরবাসীর মুখে মুখে ফেরে। ডুপ্লের সময়কালে শহর ঘিরে গড় বা পরিখা তৈরি হয়েছিল। ভদ্রেশ্বরের দিক থেকে শহরে প্রবেশপথের তোরণও ফরাসিদের তৈরি। মহকুমা হাসপাতালও তৈরি হয় ফরাসি আমলে। নিত্যগোপাল স্মৃতি মন্দিরে রয়েছে ফরাসি স্থাপত্যের নিদর্শন। স্ট্র্যান্ড সংলগ্ন‌ ফ্রেঞ্চ মিউজিয়ামেও রয়েছে সেই যুগের নানা নিদর্শন।

খেলাধুলোর ক্ষেত্রেও ফরাসি আমল থেকে চন্দননগর জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। সেই সময় থেকেই চন্দননগর পৃথক ক্রীড়া জেলার মর্যাদা পেয়ে আসছে।

স্বভাবতই ফরাসিদের সঙ্গে চন্দননগরের নাড়ির যোগ! চন্দননগরবাসী তেমনটাই মনে করেন। বিশ্বকাপে ফাইনালের সরণীতে যত এগিয়েছে দিদিয়ে দেঁশর দল, ততই বাঁধনছাড়া হয়েছে এই শহরের উচ্ছ্বাস। সেমিফাইনালের দিন শোভাযাত্রা বেরিয়েছে। হুগো লরিস, স্যামুয়েল উমতিতি, আঁতোয়া গ্রিজ়ম্যান, কিলিয়ান এমবাপেদের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন সারা চন্দননগর।

আজও মেগা ইভেন্টের জন্য তৈরি এখানকার বৌবাজার, বড়বাজার, স্ট্র্যান্ড, বিবিরহাট, চাঁপাতলা— সব এলাকা। এমবাপে-গ্রিজম্যানরা যেন চন্দননগরেরই ঘরের ছেলে! সন্তান সঙ্ঘের কর্মকর্তা কাঞ্চন নন্দী বলেন, ‘‘সবাই এক সঙ্গে ক্লাবের এলইডি টিভিতে খেলা দেখব। পিকনিক হবে। ফ্রান্স জিতলে শোভাযাত্রার পরিকল্পনা আছে।’’ শরৎ সঙ্ঘের কর্মকর্তা তাপস পালও বলেন, ‘‘কাল ফ্রান্সের জয় চাইছি। জিতলে নিশ্চয়ই উৎসব হবে।’’

চন্দননগর স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বামাপদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চন্দননগরের সমাজ জীবনে ফরাসি উপনিবেশের প্রভাব পড়েছিল। এই শহর ফরাসিদের ভোলেনি। মনেপ্রাণে চাই, ফ্রান্স জিতুক। ক্রোয়েশিয়ার থেকে ফ্রান্স অনেক এগিয়েও।’’

১৯৯৮ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে ফ্রান্স বিশ্বকাপ জেতার পরে এই শহরের পাড়ায়-পাড়ায় বিজয় মিছিল হয়েছিল। আবির উড়েছিল। বাজি ফেটেছিল।

এ বার কুড়ি বছর আগের স্মৃতিই ফিরিয়ে আনতে চায় সাবেক ফরাসডাঙা।

Fifa World Cup 2018 Farasdanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy