Advertisement
E-Paper

নেই নজর, পিকনিক স্পট মহিষরেখায় বাড়ছে দূষণ

নদের পাড়ে ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে বর্জ্য, মদের বোতল, খাবারের উচ্ছিষ্ট। পিকনিকের মরসুম শুরু হতে চলল।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২০
দূষিত: নদের পাড়ে পড়ে রয়েছে বর্জ্য। প্রকাশ্যেই মদ্যপানের আসর (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

দূষিত: নদের পাড়ে পড়ে রয়েছে বর্জ্য। প্রকাশ্যেই মদ্যপানের আসর (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

সাধারণ মানুষের কাছে উলুবেড়িয়ার মহিষরেখার দামোদরের পাড় ‘পিকনিক স্পট’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এখন সেখানে গেলে যে কোনও মানুষ বিভ্রান্ত হবেন। ‘পিকনিক স্পট’ নাকি ভাগাড়!

নদের পাড়ে ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে বর্জ্য, মদের বোতল, খাবারের উচ্ছিষ্ট। পিকনিকের মরসুম শুরু হতে চলল। কিন্তু জায়গাটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁদের ক্ষোভ, সুন্দর জায়গাটি মদ্যপানের ‘আদর্শ’ জায়গায় পরিণত হয়েছে।

এ সবের জেরে এই এলাকায় দূষিত হচ্ছে দামোদর। নদনদীর দূষণ রুখতে জাতীয় পরিবেশ আদালত বারবার রাজ্য সরকারকে সচেতন করছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে আবার জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে পঞ্চায়েতগুলিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু মহিষরেখায় সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় অবশ্য বলেন, ‘‘গঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় নদীর পাড়ে আমরা ১৩টি শৌচাগার বানাচ্ছি। দামোদরের পাড়েও চড়ুইভাতি করার জায়গায় শৌচাগার বান‌ানোর প্রস্তাব আছে। শীঘ্রই হয়ে যাবে। কিছু অস্থায়ী ভ্যাটও ওখানে রেখে দেওয়া হবে।’’ গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নদীর ধারে প্রকাশ্যে মদ্যপান বন্ধ করতে জোরদার অভিযান চালানো হবে।

প্রতি বছর শীতের মরসুমে হাওড়া জেলা তো বটেই, অন্য জেলা থেকেও বহু মানুষ মহিষরেখায় দামোদরের পাড়ে চড়ুইভাতি করতে আসেন। মুম্বই রোড এবং রেলপথ— দু’ভাবেই এখানে আসার সুবিধা থাকায় এটি চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজনের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। গ্রামবাসীরা জানান, এখন এখানে সকাল থেকেই মদ্যপানের আসর বসে যায়। নানা বয়সের মানুষ বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বসে পড়েন। দূরদূরান্ত থেকে নেশার টানে মোটরবাইক এবং গাড়ি নিয়েও দামোদরের পাড়ে আসেন। অভিযোগ, মদের আসরে বসা লোকজন শুধু যে দামোদর দূষিত করেন‌ তাই নয়, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মোটরবাইকে চড়ে দামোদরের বাঁধ ধরে যাতায়াতও করেন। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটে। অনেক সময়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে মারপিটেও জড়ান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ নদের বাঁধ ধরে টহল দিলেও মদ্যপদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না।

চড়ুইভাতির সময়েও দামোদর দূষিত করা হয় বলে অভিযোগ। যাঁরা চড়ুইভাতি করতে আসেন, তাঁদের অধিকাংশই থার্মোকলের থালাবাটি এবং জল ও চা খাওয়ার জন্য প্লাস্টিকের গ্লাস আনেন। খাবারের উচ্ছিষ্ট, থার্মোকল এবং প্লাস্টিকের গ্লাস অবাধে ফেলা হয় দামোদরে। দেখার কেউ নেই। এই এলাকায় প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার কমানোর আবেদন জানিয়ে ধারাবাহিক প্রচার করছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। চড়ুইভাতির সময়ে সংস্থার সদস্যেরা একাধিকবার থার্মোকল এবং প্লাস্টিক সংগ্রহ করে এনে অন্যত্র নষ্ট করে ফেলেছেন। সংস্থার পক্ষে জয়িতা কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা বারবার প্রশাসনের কাছে বলেছি, চড়ুইভাতির মরসুম শুরুর আগে কিছু ভ্যাট বসানো হয়। শৌচাগার তৈরি করা হোক। কিন্তু কিছুই হয়নি। ফলে, চড়ুইভাতিতে আসা লোকজন দামোদরেই শৌচকর্ম করেন। এটা অনভিপ্রেত।’’ এ বারেও তাঁরা একই দাবি জানিয়ে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিওকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান জয়িতা।

Picnic Spot Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy