Advertisement
E-Paper

ফাঁদ পেতে ধর্ষণে অভিযুক্তকে দেড় বছর পরে ধরল পুলিশ

দেড় বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। এক তরুণীকে সাহায্য করার নাম করে তাঁকে ধর্ষণ করার অভিযোগে শেখ সাফাতুল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৮
ধৃত সাফাতুল্লা।-তাপস ঘোষ।

ধৃত সাফাতুল্লা।-তাপস ঘোষ।

দেড় বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

এক তরুণীকে সাহায্য করার নাম করে তাঁকে ধর্ষণ করার অভিযোগে শেখ সাফাতুল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মুর্শিদাবাদের মিল্কিচক রঙ্গপাড়ার বাসিন্দা ওই যুবককে ৬ ডিসেম্বর নদিয়ার দেবগ্রাম থেকে গ্রেফতার হয়। ব্যান্ডেল জিআরপি-তে অভিযোগ হওয়ার জন্য বুধবার ওই যুবককে ব্যান্ডেলে আনা হয়। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন।

রেল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ অগষ্ট বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা ওই তরুণী কাজের খোঁজে কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু কলকাতার বিভিন্ন সংস্থায় ঘুরেও কাজের সুযোগ না পেয়ে সে দিনই বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরতে সন্ধ্যায় হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। কিন্তু তখন বিহারের কোনও ট্রেন না থাকায় বাড়িতে তা ফোন করে জানানোর জন্য টেলিফোন বুথের খোঁজ করতে থাকেন। সেই সময়েই শেখ সাফাতুল্লার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। নিজের ফোন থেকে ওই তরুণীকে বাড়িতে ফোন করার সুযোগ দেয় সে। বাড়িতে ফোন করে ওই তরুণী সেদিন আর ফিরতে পারবেন বলে না জানান। এই অবস্থায় সাফাতুল্লা তাঁকে ব্যান্ডেল থেকে অন্য ট্রেন ধরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি হয়ে যান ওই তরুণী।

তরুণী রেল পুলিশকে জানিয়েছে, সেদিনই রাত ৮টা নাগাদ তারা ব্যান্ডেলে পৌঁছয়। এরপর সাফাতুল্লা কাটোয়া লোকাল ধরে তাকে নিয়ে নবদ্বীপে পৌঁছয়। সেখানে গঙ্গা পেরিয়ে মায়াপুরে গিয়ে সাফাতুল্লা তাকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি হোটেলে ওঠে। তরুণীর অভিযোগ, রাতে সাফাতুল্লা তাকে ধর্ষণ করলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পর সাফাতুল্লা তাকে ভয় দেখিয়ে পরদিন ২২ অগস্ট সকালে বিহারের ট্রেনে তুলে দেবে বলে জানায়। পরদিন তারা নবদ্বীপ পৌঁছে কাটোয়া লোকাল ধরে ব্যান্ডেলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর মাঝপথে তাকে না জানিয়েই সাফাতুল্লা কালনা স্টেশনে নেমে পালিয়ে যায়।

বাড়ি ফেরার জন্য তরুণীটি কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। অন্য যাত্রীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সমস্ত ঘটনা জানায়। এরপর যাত্রীরা সাফাতুল্লার খোঁজ করলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। ট্রেন ব্যান্ডেলে পৌঁছলে যাত্রীরা ওই তরুণীকে নিয়ে রেল পুলিশের কাছে সাফাতুল্লার নামে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। তদন্তে নেমে পুলিশ মায়াপুরের ওই হোটেল থেকে সাফাতুল্লার জমা দেওয়া আধার কার্ড উদ্ধার করে। রেল পুলিশের পক্ষ থেকে বিহারে তরুণীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ২৪ আগষ্ট ব্যান্ডেল থেকে ওই তরুণী বাড়ি ফিরে যায়। এরপর নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও সাফাতুল্লাকে ধরতে পারেনি পুলিশ। দিন কয়েক আগে মোবাইলের সূত্র ধরে সাফাতুল্লার খোঁজে ব্যান্ডেল রেল পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর চন্দ্রনাথ বটব্যালের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল ৫ ডিসেম্বর নদিয়ায় হানা দেয়। কিন্তু তাকে ধরা যায়নি।

কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ৬ই ডিসেম্বর একজন সিভিক পুলিশকে রোগী সাজিয়ে সাফাতুল্লার মাসতুতো ভাইকে দিয়ে তাকে ফোন করে জানানো হয়, তার পরিচিত এক ব্যক্তি পথ দুর্ঘটনায় অসুস্থ। তার কাছে প্রায় ৫০,০০০ হাজার টাকা রয়েছে। নদিয়ার দেবগ্রামে কাটোয়া মোড়ের কাছে একটি নার্সিংহোমে এসে যেন সে ওই টাকা নিয়ে যায়। টাকার লোভ সামলাতে না পেরে সাফাতুল্লা আসতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ব্যান্ডেল জিআরপি-র এক পদস্থ কর্তা জানান, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছিল। কিন্তু কিছুতেই তাকে ধরা যাচ্ছিল না। কয়েকদিন আগে মোবাইলের সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Rape Accused Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy