Advertisement
E-Paper

রিষড়া কাণ্ডে আদালতে গোপন জবানবন্দি ছাত্রীর

সাহিদের জামিনের আবেদনে শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে একটি চিঠি জমা দেন তাঁর আইনজীবী ধূর্জটিনারায়ণ পাকড়াশি। তিনি আদালতকে জানান, গত ৪ ডিসেম্বর বিধানচন্দ্র কলেজের ওই ছাত্রীই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহিদের উপরে চড়াও হন।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৫
অভিযুক্ত: জাহিদ হাসান খান। নিজস্ব চিত্র

অভিযুক্ত: জাহিদ হাসান খান। নিজস্ব চিত্র

একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে রিষড়া-কাণ্ডে এ বার জড়িয়ে গেল উপ-পুরপ্রধান জাহিদ হাসান খানের নাম। তিনি ছাত্রী নিগ্রহে অভিযুক্ত সাহিদ হাসান খানের বাবা।

সাহিদের জামিনের আবেদনে শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে একটি চিঠি জমা দেন তাঁর আইনজীবী ধূর্জটিনারায়ণ পাকড়াশি। তিনি আদালতকে জানান, গত ৪ ডিসেম্বর বিধানচন্দ্র কলেজের ওই ছাত্রীই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহিদের উপরে চড়াও হন। পরের দিন দুঃখপ্রকাশ করে ঘটনার জন্য যে তিনিই দায়ী, সে কথা জানিয়েই ছাত্রীটি কলেজের টিচার-ইনচার্জের কাছে ওই চিঠিটি জমা দেন। কিন্তু শনিবার ওই চিঠি প্রসঙ্গেই গুরুতর অভিযোগ তুলে দিলেন ছাত্রীটি।

এ দিন ছাত্রীটি শ্রীরামপুর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন। ওয়ালশ হাসপাতালে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়। ছাত্রীটির অভিযোগ, ‘‘৪ ডিসেম্বর ঘটনার পরেই হুমকি দিয়ে আমাকে রিষড়া পুরসভায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঘর বন্ধ করে ভাইস-চেয়ারম্যান এবং যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, সবাই জোর করে চিঠি ‌লিখিয়ে নেন। সেটাই আদালতে পেশ করা হয়েছে।’’ ছাত্রীটির দাবি, কলেজে জমা না-দিয়ে চিঠিটি অভিযুক্তেরা নিজেদের কাছে রেখেছিলেন। এখন তিনি মুখ খোলায় আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তিনি পুলিশকেও জানিয়েছেন বলে দাবি করেন ছাত্রী। শুক্রবারই কলেজের টিচার ইনচার্জ রমেশ কর জানিয়েছিলেন, ছাত্রীর এ রকম কোনও চিঠি তিনি পাননি।

চিঠি নিয়ে জাহিদ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আদালতে মামলা চলছে। কিছু বলব না।’’ পুরপ্রধান‌ বিজয়সাগর মিশ্রের দাবি, ‘‘পুরসভা জুড়ে সিসিক্যামেরা রয়েছে। প্রতিদিন নজরদারি করা হয়। এমন কিছু ঘটে থাকলে ধরা পড়ত।’’ দলের নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যা অভিযোগ আসছে, তা পুলিশই দেখবে। ঘটনার কথা জানামাত্র পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’

পুলিশ কী বলছে?

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত হচ্ছে। কোনও ফাঁক রাখা হবে না। তদন্তে আরও নানা জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

কুপ্রস্তাবে সাড়া না-দেওয়ায় সাহিদ ওই ছাত্রীটিকে কয়েকদিন ধরে মারধর, শ্লীলতাহানি এবং তাঁর উপরে যৌন নির্যাতন করছিলেন বলে অভিযোগ। ছাত্র সংসদের ঘরের সিসিটিভি-র ফুটেজেও দেখা গিয়েছে নিগ্রহের ছবি। শুক্রবার ওই ছাত্রনেতা শ্রীরামপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর ১৪ দিনের জেল-হাজত হয়।

ছাত্রীটির দাবি, পুলিশকে জানানোর পরে সাহিদ মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে বোঝাপড়া করতে চান। পরে কলেজের কিছু ছেলেমেয়েকে বাড়িতে পাঠিয়ে হুমকি দেন। টিচার ইনচার্জ বারবার তাঁর অভিযোগ না-পাওয়ার কথা কেন বলছেন, তা নিয়ে এ দিন বিস্ময়ও প্রকাশ করেন তিনি। রমেশবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ করা নিয়ে ছাত্রীটি অসত্য বলছেন। বিকেলে কলেজের তরফে পাঁচজন ওঁর বাড়ি গিয়ে কথা বলেছেন। আমি নিজেও ফোনে কথা বলেছি। কলেজে এলে পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’’

ইতিমধ্যেই রিষড়া থানার তরফে কলেজের কাছে ওই ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু রমেশবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ফুটেজ নেই। তাঁদের কাছে মাত্র সাত দিনের সিসিটিভি-র ফুটেজ সংরক্ষিত থাকে। তা হলে সে দিনের ফুটেজ কে সরাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Rishra Assault Case TMCP রিষড়া Zahid Hasan Khan জাহিদ হাসান খান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy