Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন, অনুমান

দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বিকেলে ব্যান্ডেলে মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিশেষ ঘোষ প্রমুখ সামিল হন।

সমবেত: অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল। নিজস্ব চিত্র

সমবেত: অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:১৫
Share: Save:

আরও এক দিন পার। শনিবার সকালে ভিড়ে ঠাসা ব্যান্ডেল স্টেশনে তৃণমূল নেতা দিলীপ রামকে খুনের ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি রেল পুলিশ।

দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বিকেলে ব্যান্ডেলে মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিশেষ ঘোষ প্রমুখ সামিল হন।

দিলীপ খুনের মামলা হয়েছে ব্যান্ডেল জিআরপি থানায়। ঘটনার কিনারায় চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরাও তদন্তে নেমেছেন। ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত অভিযুক্ত বিজু পাসোয়ানের এক সাগরেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, দিলীপকে মারতে ভাড়াটে খুনি লাগানো হয়ে থাকতে পারে। নিহতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে দেখা হবে যদি কোনও সূত্র মেলে।

প্রতিদিনের মতোই শনিবার সকালে কাজে যাওয়ার জন্য ব্যান্ডেল স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন দিলীপ। রেললাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মের দিকে যাওয়ার সময়েই দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, নিহতের স্ত্রী রিতু সিংহ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তারা সকলেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং এলাকায় পরিচিত মুখ। দিলীপও তাদের চিনতেন। তদন্তকারী এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দিনের আলোয় ওই জায়গায় স্থানীয় কেউ গুলি চালালে সহজেই চিহ্নিত হয়ে যেত। ফলে ভাড়াটে খুনি লাগানোর সম্ভাবনার দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

অভিযুক্ত বিজুর সঙ্গে যে দিলীপের শত্রুতা ছিল, তা পুলিশ অফিসাররা মানছেন। নিহতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, দিলীপের জন্যই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় ‘দাদাগিরি’ করতে পারছিল না। সেই কারণেই তাঁকে মারার চেষ্টা চলছিলই। হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশকে তা জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। এই অভিযোগে চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সরব হন বিধায়ক অসিতবাবু। চুঁচুড়া থানার আইসি এবং ব্যান্ডেল ফাঁড়ির ইনচার্জকে বদলি করা হয়।

গুলিবিদ্ধ দিলীপকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পথে তিনি মারা যান। ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং কলকাতায় পাঠাতে দেরির অভিযোগ তোলে নিহহের পরিবার। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গুলি দিলীপের করোটিতে আটকে ছিল। অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করার পরিকাঠামো এখানে না থাকায় কলকাতার হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল সুপার উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওঁর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল। এখানে ভেন্টিলেশনে রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া ওঁকে বের করা সম্ভব ছিল না। এখানে ওই অ্যাম্বুল্যান্স নেই। শ্রীরামপুর থেকে তা আসার পরে চিকিৎসক এবং নার্স দিয়ে ওঁকে পাঠানো হয়। গাফিলতির প্রশ্নই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dilip ram Bandel Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE