ফাইল চিত্র।
চালকদের নিয়ম-শৃঙ্খলায় বাঁধতে এ বার কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করল বালির পুলকার মালিক সংগঠন। তবে শুধু চালকই নন, প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিয়ে মালিকদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল সংগঠন। সোমবার মালিক সংগঠনের এক বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিয়ম না মানলে কিংবা কর্তব্যে গাফিলতি দেখা দিলে সংগঠন থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে চালককে। চালাতে দেওয়া হবে না স্কুলগাড়িটিও। এমনকী ওই চালক এবং ওই গাড়ি যাতে কখনও কোনও স্কুলের পড়ুয়া বহন করতে না পারে, পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে সে ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ক’দিন আগেই লিলুয়া বড় গেটের সামনে জিটি রোডের উপরে খুদে পড়ুয়াদের দাঁড় করিয়ে রেখে ‘বেপাত্তা’ হয়ে গিয়েছিলেন পুলকারের চালক ও খালাসি। প্রায় এক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার পরে সেই সব খুদেদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গিয়েছিল ট্রাফিক পুলিশ। আবার দিন দুই আগে ডোমজুড়ে এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল আচরণের অভিযোগ ওঠে স্কুলগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে। এ সব ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তাই সোমবার রবীন্দ্রভবনের রক্তকরবী মঞ্চে স্কুলগাড়ির মালিক ও চালকদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘বালি পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠনে প্রায় ২৫০টি পুলকার রয়েছে। ওই দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বালি ট্রাফিকের আইসি কল্যাণ চক্রবর্তী, সংগঠনের সভাপতি প্রবীর রায়চৌধুরী এবং উপদেষ্টা ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায়।
সংগঠনের সম্পাদক মদন জানা জানিয়েছেন, বৈঠকে কয়েকটি নিয়ম ও সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে চালকদের। যেমন, দেরি হয়েছে অজুহাতে অহেতুক ওভারটেক করা চলবে না। প্রয়োজনে স্কুলে ফোন করে জানিয়ে দিতে হবে পড়ুয়াদের পৌঁছতে কতটা দেরি হবে। সকালে যে সময়ে পড়ুয়াদের গাড়িতে তোলা হয় তারও পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছে যেতে হবে। শুধু পড়ুয়াদের নিয়ে গেলেই হবে না, গাড়িতে তাদের কোনও কষ্ট হচ্ছে কি না কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে সে দিকেও। স্কুল থেকে জিটি রোড ধরে পড়ুয়াদের পুলকার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সময়ে সঠিক ভাবে নিরাপত্তা দিতে হবে। আর সে জন্য শুধু চালক নয়, প্রতিটি গাড়িতে খালাসি রাখা বাধ্যতামূলক। মদনবাবু বলেন, ‘‘অনেক সময়ে দেখা যায় চালকেরা নেশা করে গাড়ি চালাচ্ছেন বা পড়ুয়াদের নামানোর পরে নেশার আসরে বসে পড়েন তাঁরা। কোনও ভাবেই এ আর মেনে নেওয়া যাবে না।’’
তবে শুধু চালকেরাই নন। দায়িত্ব এড়াতে পারবেন না স্কুলগাড়ির মালিকেরাও। ওই সংগঠন সূত্রে খবর, অনেক সময়েই দেখা যায় কম বেতনে অনভিজ্ঞ চালক দিয়ে পুলকার চালানো হচ্ছে, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই, এমনকী দীর্ঘ দিন গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণও হয়নি। বৈঠকে জানানো হয়েছে, মালিকদেরও এ বিষয়ে সজাগ হতে হবে। গাড়ি বার হওয়ার পরে মালিকদেরও রাস্তায় নেমে চালক ও গাড়ির উপরে নজরদারি চালাতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই পুলকারে যাতায়াত করা পড়ুয়াদের অভিভাবক, চালক, মালিক, স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে নিয়ে ফের বৈঠক করা হবে বলেও সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy